ভোলাহাট প্রতিনিধিঃ ২০০৮ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাটে পল্লী বিদ্যুতের ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে লাইসেন্স নিয়ে কাজ শুরু করেন এমাজউদ্দিন। তার পিতার নাম শুকুর(তেলী)। বাড়ী উপজেলার বজরাটেক কালিতলা গ্রামে। অভাব অনটনের সংসার। পিতা তেল বিক্রয় করে কোন রকম সংসার চালাতো। এমাজউদ্দিন ইলেকট্রিশিয়ান লাইসেন্স পেয়ে পল্লী বিদ্যুতের অসাধূ কর্মচারী কর্মকর্তাদের কৌশলে বাগে নেয়। শুরু হয় যোগসাযোসে অর্থ বাণিজ্য।
কোন গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ নিলে আগে তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তারপর অর্থ দেনদেনের দরকষাকষি ঠিকঠাক হলে ভাগ্যে মিলবে বিদ্যুৎ সংযোগ। এ ভাবে পল্লী বিদ্যুতের আবাসিক বিদ্যুৎ সংযোগে নিয়মানুযায়ী গ্রাহককে সাড়ে ৭শত টাকা লাগার কথা থাকলেও আদায় করতো ১০ হাজার টাকা করে। আর বাণিজ্যিক সংযোগে আদায় করতো ১২ হাজার টাকা করে।
অতিরিক্ত অর্থ আদায়ে এমাজের দৌরাত্ম বেড়ে গেলে অতিষ্ঠ এলাকাবাসি পল্লী বিদ্যুতের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিকার চেয়ে তার নামে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সরজমিন তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০১৫ সালে তার লাইসেন্স বাতিল করেন কর্তৃপক্ষ। দিন কয়েক পর ঘুঁটির জোরে আবারও বাগিয়ে নেয় লাইসেন্স। শুরু হয় আবারও অর্থ বাণিজ্য। এবার আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠে অর্থ বাণিজ্যে। উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ২৪জন দালাল নিয়োগ দেয় এমাজ। ২৪জন দালালের মাধ্যমে আদায় করতে থাকে অতিরিক্ত অর্থ।
এমাজ বর্তমান ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভোলাহাট পল্লী বিদ্যুৎ সাব-জোন অফিসে যোগদানকারী ওয়ারিং ইনন্সপেক্টর আরাফুল ইসলামের সাথে যোগসাযোস করে গ্রাহক হয়রানি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। উপজেলার কোন গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ নিলে গ্রাহক ফরম ও জমির দলিলের ফটোকপিতে এমাজ তথ্য দিয়ে স্বাক্ষর না করলে গ্রাহকের সংযোগ মিলে না। অপরদিকে যাদের জমির দলিল নাই তাদের গুণতে হয় আরো মোটা অংকের টাকা। গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগের ওয়ারিং পরিদর্শণে ইন্সপেক্টর আশরাফুল নিজে না যেয়ে কথিত ইন্সপেক্টর এমাজুদ্দিন পল্লী বিদ্যুতের চাঁপাইনবাবগঞ্জ-হ ১৩-১৬৮৪ নং- মোটরসাইকেলটি ব্যবহার পরিদর্শনের কাজ করে থাকেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কিছু ইলেকট্রিশিয়ান অভিযোগ করে বলেন, সে প্রায় ১২ হাজার আবাসিক ও ৩ হাজার বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে হাতিয়ে রিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। ৪ বছর সময়ে অভাবি সংসারের এমাজ এখন কোটি টাকার মালিক বনে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এমাজের এখন উপজেলার বজরাটেক কালিতলা গ্রামে ও সবজা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সংলগ্ন স্কুলপাড়া গ্রামে মোট ২টি বাড়ী রয়েছে। স্কুলপাড়ার ৩তলার আলীসান বাড়ীটিতে খরচ করেছেন প্রায় ৩০ লাখ টাকা ও ৫কাঠা মাটি ক্রয় বাবদ ২০ লাখ টাকা। এক বছরের মধ্যে ১২ লাখ টাকায় আলালপুরের ৭১’র নম্বর গভীর নলকূপের আওতায় ২ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। আমবাগান ক্রয় করা আছে প্রায় ৫০ লাখ টাকারও বেশ। এদিকে তার ঘুঁটির জোরে তার ছোট ভায়ের পল্লী বিদ্যুতে চাকুরির সুযোগও করে নিয়েছেন। এ ঘটনায় এমাজুদ্দিন সংবাদ প্রচার না করার জন্য এ প্রতিবেদককে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে এমাজুদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছু ঘটনা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
অপরদিকে ইনন্সপেক্টর আশরাফুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করনে এবং বলেন, লোকবলের অভাবে তাকে দিয়ে ওয়্যারিয় এর কাজ করা হয়। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ব্যাপারে তার কিছু জানা নাই বলে জানান। ভোলাহাট পল্লী কিদ্যুতের সাব- জোন অফিসের এজিএম সোহেল রানার সাথে যোগাযোগ করা ইলেককট্রিশিয়ান এমাজের দূর্নীতির বিষয়ে তিনি শুনেছেন। তার ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০