খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক: শ্রীলংকায় ঘটে যাওয়া স্মরণকালের বর্বরোচিত হামলার পরিকল্পনা ভারতে বসে করা হয়েছিল বলে ওঠে এসেছে। গত রোববার ইস্টার সানডে প্রার্থনার সময় একযোগে বিস্ফোরণে মূল ভূমিকা রাখা জাহরান হাশেম দীর্ঘদিন ধরে ভারতে অবস্থান করেছিলেন। আত্মঘাতী হামলার প্রশিক্ষণসহ ২০১৪ সালে জাতীয় তাওহিদ জামাত গঠনের পরিকল্পনা তিনি ভারতে বসে করেছিলেন বলে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার শ্রীলংকার প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান জয়াবর্ধনেও সংসদে বলেছেন, তদন্তে দেখা গেছে স্থানীয় ন্যাশনাল তৌহিদ জামায়াত (এনটিজে) এ ঘটনার পেছনে ছিল। এর সঙ্গে ভারতের ছোট মৌলবাদী ইসলামি গোষ্ঠীর সংযোগ রয়েছে।
সংসদে জয়াবর্ধনে বলেন, এই ন্যাশনাল তৌহিদ জামায়াত গোষ্ঠীর হামলার সঙ্গে (জেএমআই) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, এখানে উল্লেখ করা যায় জামায়াত-উল-মুজাহিদীন ভারত নামে পরিচিত এ গোষ্ঠীটি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানায়, আত্মঘাতী জাহরান হাশেম দীর্ঘদিন দক্ষিণ ভারতে ছিলেন। এ সময় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। এরপর ২০১৪ সালে কাট্টানকুডিতে জাতীয় তাওহিদ জামাত গঠন করেন তিনি। চরমপন্থী এ সংগঠনটি পরিচালনার ক্ষেত্রে ভারত থেকেই যাবতীয় সহায়তা পেতেন জাহরান হাশেম।
ইস্টার সানডের প্রার্থনার সময় শ্রীলংকার গির্জা ও হোটেলে হামলার মূলহোতা জাহরান হাশেমের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে বহু বছর ধরে অভিযোগ করে আসছিলেন শ্রীলংকার মুসলমানরা।
শ্রীলংকা বাট্টিকোলা অঞ্চলে ৪০ বছর বয়সী এই আত্মঘাতী মোহাম্মদ জাহরান ও মৌলভী হাশেম নামে পরিচিত। গড়পড়তার এক মধ্যবিত্ত মুসলমান পরিবারে জন্ম নিয়েছেন তিনি। দেশটির মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাট্টানকুডিতে একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা শুরু করলেও পরবর্তীতে ঝরে পড়েন। পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি।
স্থানীয় মুসলমানরা তাকে আপদ হিসেবেই জানতেন। স্থানীয় মসজিদে নানা সমস্যার মূল কারণ ছিলেন এই জাহরান। সাধারণ মুসল্লিদের সঙ্গে তার বিতর্ক লেগেই থাকত। একদিন এক মুসল্লিকে হত্যা করতে তলোয়ার উঁচিয়ে তেড়ে গিয়েছিলেন। শ্রীলংকার মুসলিম কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিলমি আহামেদ বলেন, তিন বছর আগেই হাশেম সম্পর্কে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিলেন তিনি।
গত মঙ্গলবার প্রকাশ করা এক ভিডিওতে হামলার দায় নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এতে হাশেমের সেই পরিচিত উগ্রমুখটি দেখা গেছে।
ফুটেজে আইএস নেতা আবুবকর আল বাগদাদির আনুগত্য প্রকাশ করে আটজনকে শপথ নিতে দেখা গেছে। যাদের মধ্যে কেবল হাশেমের গোলাকার মুখটিই খোলা ছিল। বাকিরা মুখ ঢেকে আনুগত্যের শপথ নেন।
মাথা কালো কাপড়ে ঢাকা রাইফেল বহনকারী হাশেম অন্যদের শপথবাক্য পাঠ করান। বাকিরাও তার মতো কালো পোশাক পরলেও তাদের মুখমণ্ডল ছিল সম্পূর্ণ ঢাকা।
এদিকে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপলা সিরিসেনা শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, হোটেলে হামলার সময়ই মূল অভিযুক্ত জাহরান হাশেম নিহত হয়েছেন।
সূত্র: দ্য হিন্দু ও ডন
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০