খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে (সিএএ) অপ্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে গাল্ফ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটা বলেছেন তিনি। তবে বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাক্ষাৎকারে সিএএ সহ রোহিঙ্গা ইস্যু, ভারত থেকে পাল্টা অভিবাসন, কয়লা শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।
সিএএ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বুঝলাম না তারা (ভারত সরকার) এটা কেন করলো। এটার কোনো প্রয়োজন ছিল না।’
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস করে ভারতের পার্লামেন্ট।
আইন অনুসারে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া ৬টি সংখ্যালঘু
ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। এই তিন দেশ থেকে হিন্দু,
বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরা যদি ভারতে ২০১৫ সালের
আগে গিয়ে থাকে তাহলে তাদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে।
আইনটিতে মুসলিমদের বাদ দেয়ায় তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সিএএ ও জাতীয়
নাগরিকপঞ্জীর বিরুদ্ধে ভারতজুড়ে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা
করছেন, এতে ভারত থেকে মুসলিমরা নিপীড়নের ভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসবে।
এদিকে, ভারত থেকে অভিবাসন হওয়ার ব্যাপারে শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞেস করা হলে
তিনি বলেন, না, ভারত থেকে পাল্টা অভিবাসন হয়নি। কিন্তু ভারতের ভেতরে মানুষ
নানা সমস্যায় ভুগছে।
পুরো বিষয়টিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী
বলেন, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ সরকার বরাবরই সিএএ ও এনআরসিকে
ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবেই দেখে আসছে। ভারত সরকার, তাদের দিক থেকে
বলেছে যে, এনআরসি ভারতের নিজস্ব ব্যাপার। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র)
মোদি গত অক্টোবরে আমার নয়া দিল্লি সফরে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে এ ব্যাপারে
নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান করতে হবে
শেখ হাসিনার মতে, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছে।
বিস্তৃত ঘরানার খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বজায় রয়েছে। তবে মিয়ানমার
থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের নিয়ে তিনি কিছুটা উদ্বেগ
প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট উদ্ভূত হয়েছিল মিয়ানমারে।
এর সমাধানও তাদের ওপরই নির্ভরশীল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মিয়ানমার নিরাপদ
ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের প্রধান উদ্বেগগুলো
নিয়ে কোনো অর্থবহ উদ্যোগ নিচ্ছে না। দুটি প্রত্যাবাসন উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে,
কারণ একজন রোহিঙ্গাও স্বেচ্ছাকৃতভাবে ফেরত যেতে চায় না। এতে প্রমাণ হয় যে,
মিয়ানমার প্রত্যাবসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই সংকটের বোঝা বাংলাদেশকে একাই বইতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সমস্যা যদি চলতে থাকে তাহলে এতে এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও
নিরাপত্তা গুরুতরভাবে আক্রান্ত হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিৎ এ সংকটের
সমাধা না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে জড়িত থাকা।
কয়লা শক্তি
বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা ব্যবহার বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। এ ঘোষণায় পরিবেশবাদীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিলেও প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন যে, এতে বিস্তৃত পরিমাণে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে এর মাত্র ২.৫ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা ব্যবহার করে। ভবিষ্যতে এ পরিমাণ ২৫ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কার্বন নিসরণের হার খুবই কম। আমাদের উন্নয়ন এজেন্ডা পূরণে ‘কার্বন স্পেস’ যৌক্তিক পরিমাণে বাড়াতে দেয়া উচিৎ।
খবর২৪ঘণ্টা, এমকে
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০