দীর্ঘ ৬/৭ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে প্রেমিকার সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক ও পরবর্তীতে প্রেমিকা ননিকা রানী রায় (২৩) কর্তৃক বিয়ের চাপ দেয়ায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ড্রামের মধ্যে ঢুকিয়ে লাশ গুমের চেষ্টায় মূল আসামী কন্সটেবলসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন (পিবিআই)। ননিকা রানী রায় ঠাকুরগাঁও জেলা সদরের মিলনপুর (গড়েয়া) গ্রামের নিপেন চন্দ্র বর্মনের মেয়ে ও রাজশাহী সরকারী নার্সিং কলেজের সদ্য পাস করে বের হওয়া ছাত্রী। তিনি পড়াশোনা শেষ করে চাকুরীর জন্য নগরীর পাঠানাপাড়া এলাকার একটি মেসে থাকতেন।
আটককৃতরা হলেন, নিহত ননিকার প্রেমিক পাবনা জেলার আতাইকুলা থানার চরাডাঙ্গা গ্রামের মৃত হেমান্ত সরকারের ছেলে নিমাই চন্দ্র সরকার (৪৩), তার সহযোগি নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার আদারিপাড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে কবির আহম্মেদ (৩০), নগরীর রাজপাড়া থানার শ্রীরামপুর টিবাঁধ এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে সুমন আলী (৩৪) ও লাশ গুমের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস চালক নগরীর রাজপাড়া থানার বিলসিমলা এলাকার সতীশ রায়ের ছেলে (নও মুসলিম) আব্দুর রহমান ওরফে সঞ্জয় (২৫)। মূল আসামীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি আসামীদের আটক করা হয়। মূল আসামী পুলিশ কন্সটেবলকে নাটোল জেলার লালপুর উপজেলার তার বোন জামাইয়ের বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
রাজশাহী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল
কালাম আজাদ জানান, চলতি মাসের ১৬ তারিখে রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানাধীন সিটি হাট থেকে সামান্য দূরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ টু রাজশাহী বাইপাস মহাসড়কে কালভার্টের নীচে কচুরীপানা যুক্ত পানিতে চালের ড্রামের মধ্যে অজ্ঞাতনামা এক যুবতীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই যুবতীর গলায় কালো ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে কে বা কারা ফেলে রেখে যায়। চাল রাখার প্লেইন সিট ড্রামের মধ্যে ভরে ঘটনাস্থল ব্রীজের নিকট পানিতে ফেলে যায়। স্থানীয়দের দেয়া খবরের ভিত্তিতে নগরীর শাহমখদুম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্নয়ের জন্য লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে শাহমখদুম থানার এস,আই(নিঃ) আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করে। লাশ শনাক্তের জন্য পিবিআই, রাজশাহীর একটি টিম ঘটনাস্থল থেকে লাশের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে ভিকটিমের পরিচয় শনাক্ত হয়। তার পরিচয় শনাক্তের পর
পিবিআই এর একটি টিম পাবনা ও নাটোর জেলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মামলার মূল আসামী রাজশাহী জিআরপি থানায় কর্মরত পুলিশ কন্সটেবল নিমাই চন্দ্র সরকারকে গ্রেফতার করে। এরপর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামী কবির আহম্মেদ ও সুমন আলীকে আটক করা হয়। তারা নিজ নিজ ভূমিকার কথা স্বীকার করে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিসিস্টের মৃতদেহ গুম করার কাজে বহনকারী মাইক্রোবাস যার রেজিষ্টেশন নং-ঢাকা মেট্রো-গ-১৩-১৮২৮ উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয় এবং মাইক্রোবাসের চালক আব্দুর রহমান ওরফে সঞ্জয়কে (নব মুসলিম) আটক করা হয়। সেও তার দোষের কথা স্বীকার করে।
ঘটনার মূল হোতা পুলিশ কন্সটেবল জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে যে, ননিকা রানী রায় এর সাথে তার আনুমানিক ৬/৭ বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে আসামী নিমাই চন্দ্র সরকারকে বিয়ের জন্য ননিকা চাপ দিচ্ছিল। এরপর কৌশলে নিমাই ননিকাকে ভাড়া বাড়ীতে ডেকে নিয়ে হত্যা করে লাশ গুমের উদ্ধেশ্যে ঘটনাস্থলে ফেলে দেয়। রোববার রাত ৯টার দিকে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এস/আর
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০