খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: সময় বাঁচাতে এবং নানারকম ঝামেলা এড়াতে মানুষ এখন আকাশপথের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উৎসব উদযাপন করতে গত কয়েক বছর ধরে অনেকেই উড়োজাহাজের শরণাপন্ন হচ্ছেন। কেউ কেউ হেলিকপ্টারে চড়েও গ্রামে ফিরছেন। এবারের ঈদযাত্রায় প্রায় সব এয়ারলাইনসের অভ্যন্তরীণ রুটের টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে।
ঈদকেন্দ্রিক অতিরিক্ত ফ্লাইটের কিছু টিকিটে তিন-চারগুণ বেশি অর্থ গুনতে হয়েছে। চাহিদার তুলনায় আসন কম হওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। তবু ঈদের আগের চার দিন ও ঈদের ছুটি শেষে চার দিনের টিকিটের জন্য হাহাকার চলছে।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, যশোর, রাজশাহী, সৈয়দপুর ও বরিশাল রুটে চলছে ফ্লাইট। ঈদ উপলক্ষে বিমানের ৪টি, নভোএয়ারের অতিরিক্ত ২৪টি, ইউএস-বাংলার ৩৫টি ফ্লাইট পরিচালনার কথা রয়েছে। অর্থাৎ যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে অভ্যন্তরীণ রুটে এবার বাড়তি ৬৩টি ফ্লাইট পরিচালনা হবে। ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল হয়ে আগে দৈনিক ৫ থেকে ৬ হাজার যাত্রী চলাচল করতেন। ঈদের কারণে এখন তা বেড়ে ১০ হাজারে উন্নীত হয়েছে।
তুলনামূলকভাবে সড়ক, নৌ ও রেলপথের চেয়ে ভাড়ার পরিমাণ বেশি হলেও আকাশপথে চলাচলে মানুষের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। উপরন্তু বিশেষ ছাড়ে ১৫০০ থেকে দুই হাজার টাকায় বিমানের টিকিট বিক্রির ঘোষণায় মধ্যবিত্তরাও সম্প্রতি আকাশপথে যাতায়াতে উৎসাহী হয়ে উঠেছে। তবে বিমান ঘোষিত ছাড়কৃত মূল্যের টিকিট যে কোথায় যাচ্ছে, কারা পাচ্ছে তা জানতে পারছেন না সাধারণ যাত্রীরা। কী পরিমাণ টিকিট ছাড় দেওয়া হয়েছে এরও উত্তর দেয়নি এয়ারলাইনস কোম্পানিগুলো। অভিযোগ আছে স্বল্পমূল্যের টিকিট ব্লক করে রেখে বিজনেস ও ইকোনমি উভয় শ্রেণির যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া হয়।
জানা গেছে, ঈদ কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ৬-৮ হাজার, কক্সবাজার ৮-১২ হাজার এবং সিলেট রুটে ৫-৬ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। আর ঢাকা-রাজশাহী রুটের টিকিট বিক্রি হয়েছে ৭-৮ হাজার টাকায়; স্বাভাবিক সময়ে তা তিন হাজার টাকা। সৈয়দপুর রুটে ৮-৯ হাজার টাকা, আগে ছিল বড় জোর সাড়ে ৩ হাজার টাকা। যশোর রুটে টিকিট বিক্রি হয় সাড়ে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত; অথচ স্বাভাবিক সময়ে তা আড়াই হাজার টাকা। আর ঢাকা থেকে বরিশাল রুটের তিন হাজার টাকার ওয়ানওয়ে টিকিটের দাম রাখা হয় সাড়ে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফিরতি টিকিটের চাহিদা কম থাকায় কিছু রুটে ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দেয় বিমান, ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, ভাড়ানির্ভর করে বাজারের ওপর। তবে অন্য এয়ারলাইনসের তুলনায় বিমানের ভাড়া কম। আর এ বছর সেপ্টেম্বরে আরেকটি ড্যাশ-৮ এয়ারক্রাফট বহরে যোগ হবে। তখন ফ্লাইটের সংখ্যা আরও বাড়বে।
জানা গেছে, কানাডা থেকে ৭৪ আসনের উড়োজাহাজটি লিজে সংগ্রহ করতে গত মাসের শেষ সপ্তাহে চুক্তি করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে ৭টি অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ফ্লাইটের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ছে। নতুন উড়োজাহাজ এলে রুটগুলোয় ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়বে।
বর্তমানে রাজশাহী রুটে সপ্তাহে ৪টি ফ্লাইট চলে; নতুন উড়োজাহাজ এলে হবে ৭টি। সৈয়দপুরে ৪টির পরিবর্তে ১৪টি, যশোরে ৮টি থেকে বাড়িয়ে ১৪টি ফ্লাইট করা হবে। এ ছাড়া সৈয়দপুর থেকে কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম রুটের ফ্লাইট চালু হবে। পাশাপাশি আঞ্চলিক রুট ইয়াঙ্গুন ও কলকাতার ফ্লাইটও বাড়বে।
বিমান সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে বিমানবহরে থাকা দুটি ড্যাশ এয়ারক্রাফট দিয়ে ৭টি অভ্যন্তরীণ ও দুটি আঞ্চলিক রুটে ফ্লাইট চলে। এর মধ্যে একটি এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণে পাঠাতে হলে ফ্লাইট অর্ধেকে নেমে আসে। আরেকটি উড়োজাহাজ যুক্ত হলে এ সমস্যা কেটে যাবে বলে আশা করছে বিমান কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া জিটুজি পদ্ধতিতে আরও ৩টি ড্যাশ এয়ারক্রাফট কেনা হবে। কানাডার বোম্বারডিয়ার থেকে এসব উড়োজাহাজ কিনতে শিগগির চুক্তি হওয়ার কথা। ওই ৩টি উড়োজাহাজের একটি বিমানের বহরে যোগ হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে। বাকি দুটি আসবে পরের বছর, ২০২০ সালে। তখন অবশ্য বর্তমান বহরে থাকা লিজের দুটি এয়ারক্রাফট বাদ পড়বে। মিসরের স্মার্ট এভিয়েশন থেকে ৫ বছরের জন্য লিজে আনা হয়েছে এই এয়ারক্রাফট দুটি।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০