বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ ‘চালের বস্তা একে বারে সস্তা, ৫০ কেজির বস্তা মাত্র হাজার ৭০ টাকা। মানে ভালো,দামে কম, ওজনেও ঘাড়তি নেই। ক্রেতাদের দুষ্টি আকর্ষন করে, ছন্দ মিলিয়ে গ্রামের পাড়ায় পাড়ায়,হাট-বাজারে মাইকিং করে এভাবেই প্রতি ১ বস্তা চাল ১ হাজার ৭০বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমান বিক্রেতারা। তারা চালের নাম বলছেন “তামরী” চাল। তবে নাম যাই হোক,দামে কম পেয়ে এসব চাল কিনছেন নি¤্ন-মধ্যবিত্ত ক্রেতারা। আর গবাদিপশুর জন্য এই চাল কিনছেন এলাকার ধনীরা। রাজশাহীর বাঘায় ৩দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভটভটি, পাওয়ার ট্রিলার, মিনি ট্রাক, উলকায় বোঝাই করে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। রীতিমতো এই চালের আড়ত বসে গেছে জনবহুল স্থানের মোড়ে মোড়ে।
বৃহস্পতিবার (০৪-১০-১৮) চকরপাড়া বাউসা গ্রামে পাওয়ার টলিতে চাল বোঝাই করে বিক্রি করছিলেন ফারুক নামের ভ্র্যাম্যমান এক বিক্রেতা। ৩দিন ধরে চাল বিক্রি করছেন। তিনি জানান, যে চাল বিক্রি করছেন, তা দেখতে লালচে ধরণের। অটোমিল থেকে তৈরী এ চালের নাম ‘তামরী’ চাল। বেশ কিছুদিন আগে এই চাল বাজারে বিক্রি হয়েছে,১ হাজার ৪’শ টাকা থেকে ১ হাজার ৫’শ টাকায়। তার দাবি বাজারে নতুন চাল আমদানি হলে, এ চালের চাহিদা আরো কমে যাবে, ফলে লোকসানে বিক্রি করছেন। বাঘা বাজারের আলহাজ¦ নুরুজ্জামান সুপার মার্কেটে মাইকিং করে একই ধরনের চাল বিক্রি করছিলেন, ওই আড়তের স্বত্তাধিকারি প্রভাষক নুরুজ্জামান।
তিনি বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ কেজি ওজনের ১ বস্তা চাল বিক্রি করছেন ১ হাজার ৭০ টাকা করে। তিনি দাবি করেন, এই চালের মান ভালো। এ চালের ভাত খেয়ে কারও কোনো ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। প্রভাষক নবাব আলী জানান,তিনি ২ বস্তা চাল কিনেছেন। রান্না করে অন্য চালের মতো ভাতের স্বাদ পাননি। তাই নিজেরা এই চাল খাচ্ছেন না। গরু-ছাগলের খাবার হিসেবে ব্যবহার করছেন। তবে এর আগে বাজারে এই দামে কোন চাল পাওয়া যায়নি। দিঘা গ্রামের নি¤্ন বিত্ত পরিবারের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই চাল রান্না করে ভাত খাচ্ছেন। ভেতরে একটা আঠা আঠা ভাব। আর এই চালের ভাত তুষ তুষ মনে হচ্ছে। বাজুবাঘা গ্রামের বাসিন্দা সাজেদুল হক বলেন, গ্রামের দরিদ্র মানুষ কয়েকদিন ধরে এই চালের তাত খাচ্ছে। এত কম দামে কিভাবে এই চাল দিচ্ছেন,জানতে চাইলে সাব্বির এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারি আব্দুস সাত্তার বলেন,কুষ্টিয়ার অনেক আড়তে এধরনের চাল মজুত রয়েছে। সেখানকার আড়ত থেকে তিনি চাল কিনে এনে বিক্রি করছেন।
বিক্রি করা কয়েকটি চালের বস্তার গায়ে লেখা রয়েছে, মেসার্স সাথী এন্টাপ্রাইজ, সাথী স্পেশাল, মার্কা, গোলাপফুল, কুষ্টিয়া, মহিদুল এগ্রোফুড, কাটা চাল, চিংড়ি মার্কা খাজানগর, জগতি, কুষ্টিয়া।
এদিকে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে এই চাল নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, কৃত্রিম চাল, কেউ বলছেন চোরাই, কেউ বলছেন এই চাল খেলে বিপদ হতে পারে। এই চালের কোনো ক্ষতিকারক দিক আছে কি না, কোথা থেকে আসছে, জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তবে লাইসেন্সধারি ডিলার ছাড়া যে কেউ চাল বিক্রি করতে পারবেননা। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০