বাঘা প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘায় প্রগ্রেসিভ ইনসিওরেন্স কোম্পানির আড়ানী শাখার ম্যানেজার ১০ দিন থেকে ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে আছে। ফলে অফিস ভবনের মালিক শান্তি রঞ্জন সরকার ও তার ছেলে রিপন সরকারকে অভিযুক্ত করে সদস্য ইয়ারুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার তিনি এই অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, ঋণ গ্রহনে আগ্রহী সদস্যের সঞ্চয়কারী টাকা ও চাকুরি দেয়ার নামে অর্ধশতাধিক ব্যাক্তির কাছে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে প্রগ্রেসিভ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এর আড়ানী শাখার ম্যানেজার শাহিন আলম।
বাঘা উপজেলার আড়ানী বাজারে এক মাস আগে শান্তি সুপার মার্কেটের দোতলায় দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে প্রগ্রেসিভ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এর আড়ানী শাখার কার্যক্রম শরু করে। অফিসোর উদ্বোধন করা হয় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর। এই অফিসের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন টাংগাইল জেলার কালিহাতি উপজেলার জকরমান গ্রামের শুকুর মাহমুদের ছেলে শাহিন আলম।
অফিস উদ্বোধনের পর ১০ হাজার টাকা বীমা করলে দুই সপ্তাহের মধ্যে এক লক্ষ টাকা, বিশ হাজার টাকার বীমা করলে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ দেয়া হবে মর্মে কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রচারনা করে ম্যানেজার শাহিন আলম। এই প্রচারনার ফাঁদে পড়ে ইয়ারুল ইসলাম ২০ হাজার টাকা জমা দেন। কিন্তু দুই সপ্তাহের আগে অফিস তালাবন্ধ করে পালিয়ে যায়। ফলে নিরুপায় হয়ে পড়েছেন ইয়ারুল ইসলামসহ অর্ধশতাধিক সদস্যরা।
ম্যানেজারের ফাঁদে পড়ে মাজদার রহমান ১০ হাজার টাকা, ইয়ারুল ইসলমা ২০ হাজার টাকা, তিতাস হোসেন ১১ হাজার টাকা, আবদুল হাকিম ৫ হাজার টাকা, মনোরঞ্জন সরকার ১৫ হাজার টাকা, সুনন্দ কুমার হালদার ১০ হাজার টাকা, জিল্লুর রহমান ১০ হাজার টাকা, মিন্টু হোসেন ২০ হাজার টাকা, সুমন হোসেন ১৫ হাজার টাকা, আসলাম হোসেন ২৫ হাজার টাকা, বিপুল সরকার ২০ হাজার টাকা, পলি খাতুন ১০ হাজার টাকা, শাকিব হোসেন ১০ হাজার, তিথি খাতুন ১৫ হাজার টাকা, স্বর্ণা খাতুন ১০ হাজার টাকা, লিখন হোসেন ৮ হাজার টাকা, মজিবর রহমান ১৫ হাজার টাকা, জালাল হোসেন ১৫ হাজার টাকা, সোহেল হোসেন ১০ হাজার টাকা, পিন্টু হোসেন ১৫ হাজার টাকা, ফিমা খাতুন ১৫ হাজার টাকা, সুমন সরকার ১০ হাজার টাকা, নুরবানু খাতুন ১০ হাজার, ছনিয়া বেগম ৩০ হাজার টাকা জমা দেন।
এছাড়া ভালো বেতন দেয়া হবে মর্মে চাকুরীর লোভে আসলাম উদ্দিন ৪০ হাজার, আমিরুল ইসলাম ১৬ হাজার টাকা, সুমেন হোসেন ১০ হাজার টাকা, জমসেদে আলী ৩০ হাজার টাকাসহ অর্ধশতাধিক ব্যাক্তি ভবন মালিক শন্তি রঞ্জন সরকার ও তার ছেলে রিপন সরকারের উপস্থিতিতে টাকা জমা দেন। কিন্তু তাদেরকে কোম্পানির কোন রিসিফ দেয়া হয়নি। দুই সপ্তাহ পর ঋণ দেয়ার দিন রিসিফ দেয়া হবে বলে জানানো হয়।
সদস্য বিপুল সরকার বলেন, আমার কাছে থেকে ৫ ভাগ সুদে নিয়ে ঋণ দিতে চায়। ফলে আমি অগ্রিম ২০ হাজার টাকা দিয়ে সদস্য হয়েছি। তবে ম্যানেজার শাহিন আলমকে সহযোগিতা করেন ভবনের মালিক শান্তি রঞ্জন সরকার, তার ছেলে রিপন সরকার ও প্রগ্রেসিভ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এর রাজশাহী জোনের সহকারি ম্যানেজার হাসানুজ্জামান। শাহিন আলম পালিয়েছে। তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। ফলে যারা সহযোগিতা করেছেন তারাই দায়ি বলে অভিযোগ করেন।
প্রগ্রেসিভ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এর রাজশাহী জোনের সহকারি ম্যানেজার হাসানুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি জানার পর থেকে ম্যানেজার শাহিন আলমকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ঋণ দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে এই বিষয়ে কেউ জানায়নি। শাহিন আলম চলে যাওয়ার পর ভবনের মালিক দুইদিন পর জানান। তবে কোম্পানির পক্ষ থেকে তার ব্যাপারে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল হাসান রেজা বলেন, গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০