ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে জানমাল রক্ষায় মানুষ ঘরে আশ্রয় নেয়। আর সরকারের দেয়া উপহারের ঘরে আশ্রয় নিতে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়। নির্মাণে অনেক অনিয়ম ও নিন্মমানের কাজ হওয়ায় ঝড় শুরু হলে টিন খুলে যায়। এমন অভিযোগ তুলেছেন আশ্রয়িতা ও বিধবা পান্না বেগম।
এমন নানা অভিযোগ উঠেছে চতুর্থ দফায় নির্মিত ঘরের অধিকাংশ বসবাসকারিদের।
পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের ধোকড়াকুল এলাকার প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, চতুর্থ দফায় সেখানে ২১ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে আশ্রয়িতারা এখানে পরিবার নিয়ে বসবাস করা শুরু করেছেন। তবে এখানে নির্মিত ঘর নিয়ে নানা অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগিরা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রায়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় চতুর্থ দফায় উপজেলায় মোট ৫৯৮ টি গৃহহীন পরিবারকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের শুরুতে প্রতিটি ঘর নির্মাণে বরাদ্দ ছিল এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। বর্তমানে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি ঘরে নির্মাণ ব্যয় বরাদ্দ দুই লাখ ৮৪ হাজার টাকা করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি পবিরারের জন্য দু'টি বেডরুম বিশিষ্ট পাকা ঘরের মধ্যে আরো রয়েছে একটি বাথরুম ও রান্নার স্থান। সেই সাথে ওই পরিবার গুলোর আধুৃনিক সুবিধার জন্য থাকছে আলাদা বিদ্যুৎ সংযোগ, পানি সরবরাহের পাশাপাশি ওই এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে আলোকবাতি। আর তাদের যাতায়াতের জন্য তৈরি করা হচ্ছে নতুন সড়ক। ফরিদুল ইসলাম বলেন, ঘর নির্মাণ কাজেও কোনো গাফলতি বা অনিয়ম করা হয়নি। সকল ঘরে সঠিক গুনগত মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।
আরশেদা বেগম নামে একজন আশ্রয়িতা বলেন, ঘরে কোনো তীর দেয়া হয়নি। আর কাঠের ছাল জাতীয় কাট দিয়ে ঘরের কাজ করা হয়েছে। নির্মাণের এক মাস না হতেই সকল কাঠ ঘুনপোকায় খেয়ে ফেলছে। তার সাথে তারকাটা দিয়ে টিন লাগানো হয়েছে। যার কারণে একটু ঝড় শুরু হলে চাল থেকে টিন খুলে যায়। তিনি বলেন, সরকারতো ঘর বানাতে পর্যাপ্ত টাকা দিয়েছে, তাহলে কাজ এতো খারাপ কেনো?
আব্দুস সালাম নামে অপর একজন আশ্রয়িতা বলেন, এখানের কাজের মান খুবই খারাপ হয়েছে। এ বিষয়ে কিছু বললে কাজ দেখভালকারিরা আমাদের ধমক দেয়। তিনি বলেন, তারা এখানে শৌচাগার নির্মাণ করে দেয়নি। উল্টো বলছে নিজেরা তৈরি করে নিতে। ইতিমধ্যে কয়েকজন নিজ অর্থে শৌচাগারের কাজ করেছে। আর যাদের পর্যাপ্ত টাকা নেই তারা এখনও শৌচাগার নির্মাণ করতে পারেনি।
এ বিষয়ে ভালুকগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর। যার কারণে এ বিষয়ে তিনি সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারবেন না বলে জানান।
অপরদিকে মূসাখাঁ আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রথম দ্বিতীয় দফায় নির্মিত ঘর গুলোর বরাদ্দ কিছু কম হলেও মান ভালো ছিল। আর এখন নির্মাণ বরাদ্দ অনেক বেশী হলেও কাজের মান খুবই খারাপ। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্টরা কাজের শেষ মুহুর্তে চরম গাফলতি করেছেন। আর এই কারণে নির্মাণ কাজের মান খুবই খারাপ হয়েছে।
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০