নিজস্ব প্রতিবেদক: নিয়ম অনুযায়ী এক থানার পুলিশ অন্য থানায় গিয়ে অভিযান চালাতে সেই থানার অনুমতি লাগে। কিন্তু তার তোয়াক্কা না করেই নগরীর বোয়ায়ালিয়া থানার এ এসআই রানাসহ আরও দুই অজ্ঞাত দুই সদস্য গভীর রাতে ঢুকে পড়ে রাজপাড়া থানা এলাকায়। রাতের আঁধারে সাধারণ পোশাকে হেলমেট পড়ে সীমানা প্রাচীর টপকে বাড়ির দরজায় লাথি দেয়। শুধু তা-ই নয় কোনো কারণ ছাড়াই দরজা খুলে দিতে বলে। কিন্তু দরজা না খোলায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং দরজা ভাঙার হুমকি দেয়। শেষমেশ দরজা খোলা হলে শুরু করে আসবাবপত্র তছনছ!
রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার তেরোখাদিয়া ডাবতলা এলাকার ঘটনা এটি। গত ২২ মার্চ গভীর রাতে স্থানীয় হার্ডওয়্যাড ব্যবসায়ী মো. বাক্কারের বাসায় ঢুকে বাড়িসুদ্ধ আসবাবপত্র তছনছ করেছে ওই চার পুলিশ সদস্য। বিছানার নীচে ছিল মাত্র সাত হাজার টাকা। তাদের যাওয়ার পর তাও আর পাওয়া যায়নি। গভীর রাতে অহেতুক এই হয়রানি ও বাড়ির জিনিসপত্র তছনছের ঘটনায় বোয়ালিয়া থানার দুই এস আইসহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবর পরদিন ২৩ মার্চ লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
অভিযোগে মহানগরীর তেরোখাদিয়া এলাকার হার্ডওয়্যার্ড ব্যবসায়ী মো. বাক্কারের ছেলে রুবেল উল্লেখ করেছেন, এ ঘটনায় মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা ও এ এসআই রানাসহ আরও দুই পুলিশ সদস্য জড়িত। অপর দুই সদস্য তাদের নাম বলেননি।
অভিযোগে রুবেল বলেন, ২২ মার্চ গভীর রাতে কয়েকজন তাদের বাড়ির প্রটেকশন ওয়াল টপকিয়ে বাসার ভেতরে ঢুকে জোরে জোরে দরজা নক করতে থাকে। এ অবস্থায় তার বাবা উঠে এসে বারান্দায় দাঁড়ালে দেখতে পান হেলমেট পরা চারজন ব্যক্তি বারান্দার গ্রীলের সামনে আছেন। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এবং হুমকি দেয় যে, তাড়াতাড়ি দরজা না খুলে দিলে অবৈধ মালামাল দিয়ে কোর্টে চালান করে দেবে।
তাদের কথপোকথনের এক পর্যায়ে বাড়ির সবার ঘুম ভেঙ্গে যায়। এ সময় আমার তিনবােন ও আমার আম্মা উঠে আসে এবং আমার ছােট বােন
জিজ্ঞাসা করে আপনারা কে, কোথা থেকে এসেছেন? এই কথা শুনে তারা আরাে ক্ষিপ্ত
হয়ে গিয়ে আমাদের পরিবারের সকল সদস্যকে অকথ্য ভাষায় কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজ
করতে থাকেন এবং গেটে লাথি মারতে থাকেন।
পরে আমাদের বাড়ির ভাড়াটিয়ারা উঠে আসালে
তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ দাবি করে আবার রাজপাড়া থানার পুলিশও দাবি করে এবং
অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়া দরজা খুলতে বলে। ভয় পেয়ে আমার বন্ধুকে ফোন দিলে আমার বন্ধু পুলক সেখানে গিয়ে হাজির হয়।
রুবেল বলেন, তখন আমরা তাকে বলি দেখাে এরা কারা এসেছে, এসে গালিগালাজ করছে। আমার বন্ধু গেটের বাহির থেকে তাদেরকে জিজ্ঞাসা
করলে ওই তিনজন নিজেদেরকে পুলিশ বলে জানায়, তখন আমার বন্ধু পুলক বলে কোন
থানা, তারা বলে বােয়ালিয়া এবং নিজেকে এসআই মােস্তফা, অপরজন নিজেকে
এসআই রানা পরিচয় দেয়। অপর দুইজন নাম বলেনি। কী কারণে এসেছেন এই রাত সোয়া ৩টায়?
তখন বলে আসামি আছে। কে আসামি? এখানে কোনো আসামি নেই বললে অন্য দুইজন সটকে পড়েন। তখন এসআই মােস্তফা ও এ এসআই রানা বলেন, আসামির নাম বলা যাবে না।
ততক্ষণে আরও ২/৩ জন আমার বাসার ভাড়াটিয়া আসলে আমি সাহস করে দরজা খুলে দিলে তারা আমাদের বাসায় ঢুকে সব কিছু তছনছ করে।
রুবেল অভিযোগে বলেন, কোনো ধরনের কোনো আসামি না থাকার পরও অহেতুক গভীর রাতে বাসায় ঢুকে বোয়ালিয়া থানার চার পুলিশ সদস্য তার বাড়ির সদস্যদের হয়রানি করেছে। আসবাবপত্রও তছনছ করেছে।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে এবং দোষী চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেছেন। এখন সেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্যও আবার ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন এসআই মোস্তফা। অভিযোগ না তুললে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হবে এমন হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী রুবেল।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার সাজিদ হোসেন খবর ২৪ ঘন্টাকে বলেন,বিষয়টি আমার জানা নাই। লিখিত অভিযোগটি যদি পুলিশ কমিশনার স্যারের দপ্তর থেকে তদন্তের জন্য আমার কাছে আসে তাহলে আমি তদন্ত করে দেখব কেন তারা এক থানার পুলিশ হয়ে অন্য থানা এলাকার বাড়িতে গিয়েছিল? সে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্ত পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বোয়ালিয়া থানার এ এসআই রানাসহ আরো অনেকের বিরুদ্ধে গুরুত্বপুর্ন্য তথ্য খবর২৪ঘন্টার হাতে এসেছে যা অতিশ্রীঘই পাঠকরে কাছে তুলে ধরা হবে।
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০