রাশেদুল ইসলাম ,নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামের জোয়াড়ি ইউনিয়নের কুমরুল গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আজিমুদ্দিন স্ত্রী হনুফা বেওয়া। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বামী মুক্তিযোদ্ধা এ অপরাধে পাক বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যায় তাদের ক্যাম্পে। সেখানে হনুফার উপর চলে পাশবিক নির্যাতন। সেখান থেকে জীবন বাজী রেখে তিনদিন পর পালিয়ে আসেন তিনি।স্ত্রী হনুফা বেওয়া একজন বীরঙ্গনা। স্বামী মুক্তিযোদ্ধা আজিমুদ্দিন মারা গেছেন ১৯৮৮ সালে। গত ২ বছর আগে মোছা. হনুফা নামে বীরঙ্গনা গেজেটে তার নাম নথিভুক্ত (নং ২০৭) হয়। দুই স্ত্রী থাকায় স্বামী মুক্তিযোদ্ধা আজিমুদ্দিনের সরকারী ভাতা ভাগ হয় দুই
ভাগে। সামান্য টাকা দিয়ে পঙ্গু সন্তান ও তার পরিবারের সদস্যদের দিন চলে অর্ধাহারে-অনাহারে। জরাজীর্ণ বাড়িতে কাটে তাদের দিন-রাত-বছর। বৃষ্টির সাথে হালকা বাতাস বইলেই পানি ঢুকে পড়ে ভাঙ্গা বেড়ার ফাঁক দিয়ে। ভিজে যায় বিছানাসহ ঘরের আসবাবপত্র। আর এ কারণে বিনিদ্র রাতও কাটাতে হয় মাঝে-মধ্যে। নাটোরের বড়াইগ্রামের জোয়াড়ি ইউনিয়নের কুমরুল গ্রামে মাত্র ৮ শতাংশ জমির উপর ছাপড়া টীনের ও পাটকাঠির বেড়া দিয়ে বসবাস করছে বীর মুক্তিযোদ্ধার ৭০
বছরের কাছাকাছি বয়সের বীরঙ্গনা স্ত্রী হনুফা বেওয়া। মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীর কাছে সর্বস্ব হারানোর ৪৭ বছর পর বীরঙ্গনা খেতাব পেলেও মেলেনি এখনও সরকারী ভাতা। জরাজীর্ণ ঘরে কষ্ট করে বাস করলেও মেলেনি কোন সরকারী ঘর। মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনা পরিবারের এই করুণ দিন যাপনের দৃশ্য সকল বিবেকবান মানুষের মনকে নাড়া দেয় ঠিকই কিন্তু তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে
আসেনি কেউ। সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে কথা হয় বীরঙ্গনা হনুফার সাথে। তিনি বলেন,‘‘এভাবেই খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। শুনেছি সরকার আমাকে বীরঙ্গনা খাতায় নাম দিয়েছে। কিন্তু কোন ভাতা এখন পর্যন্ত পাইনি। সরকার ঘর দিবে এই কথা শুনে ইউএনও অফিসে দরখাস্ত করেছি। আমি গরিব মানুষ টাকা ঘুষ না দিলে কি বাড়ি পাব। এখন বাকীটা আল্লাহ’র কাছে।’’ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শামসুল হক জানান, স্বামী মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পায় বলেই হনুফা বেওয়া বীরঙ্গনার ভাতা পাবেন না। তবে মুক্তিযোদ্ধা আজিমুদ্দিনের দুই স্ত্রী থাকায় এবং ওই ভাতা দুই জায়গায় ভাগ হওয়ার কারণে টাকার পরিমাণ কমে গেছে। এর ফলে এই অল্প টাকায় স্বাভাবিক জীবন-যাপন সত্যিই কষ্ট সাধ্য বটে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ জানান, মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনা এই পরিবারের পক্ষ থেকে ঘরের জন্য আবেদন করলে তা বিচার বিশ্লেষনপূর্বক পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর২৪ঘন্টা/নই
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০