খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় আহত শাহরিন আহমেদ বাংলাদেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে হজরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় শাহরিন আহমেদকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি। বিমানবন্দর থেকে তাকে সরাসরি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। সেখানে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হবে শাহরিনকে।
শাহরিন আহমেদ নেপালের কাঠমুন্ডু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতাল থেকে তাকে বিদায় দেয়ার সময় তাকে চিকিৎসারত চিকিৎসক এবং নার্সরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তাদের অনেকেই তার জন্য প্রার্থনা করছিলেন, যেনো তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন। নেপালের ঐতিহ্য অনুযায়ী, শাহরিনকে উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয় সঙ্গে দেয়া হয় ফুল। শেষ মুহূর্তে তাকে বিমান বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঢামেকের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল বলেন, ‘শাহরিনকে বার্ন ইউনিটে নিয়ে আসা হচ্ছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে।’ শাহরিন আহমেদ ঢাকায় পৌঁছার আগেই বিমানবন্দরে অ্যাম্বুলেন্স রেডি রাখা হয়। দুজন নার্সও এসেছেন অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে। সুমন কুমার সরকার ও সুমনা খানম এই দুজনই ঢামেক এর সিনিয়র স্টাফ নার্স।
বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে শাহরিন ঢাকায় আনা হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ জানিয়েছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে (বিজি ০৭২) নেপাল থেকে শাহরিনকে নিয়ে আসা হয়। বেলা সোয়া তিনটার দিকে হজরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় শাহরিন আহমেদকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি। তার সঙ্গে তার দুই ভাই রয়েছেন। তিনি পায়ে আঘাত পেয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেখতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস সাংবাদিকদের বলেন, ‘একজন আজ দেশে যাচ্ছেন। তার নাম শাহরিন আহমেদ।’
নেপাল ছাড়ার আনুষ্ঠানিকতাগুলো সারতে বিশেষ করে ইমিগ্রেশনের কাজগুলো যাতে লাইনে দাঁড়িয়ে না করতে হয় এবং দীর্ঘ সময় না লাগে সেজন্য দূতাবাসের কর্মকর্তারা আগেই তার কাজগুলো সেরে রেখেছিলেন।
শাহরিন আহমেদ এছাড়া আরও তিনজন অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাদের পরিবারের সদস্যরাও জানিয়েছেন যে, তারাও দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের জন্যও দূতাবাসের পক্ষ থেকে দাপ্তরিক কাজগুলো এরইমধ্যে করে দেয়া হয়েছে।
আহত আরও বেশ কয়েকজন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং তাদের সবার শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেপালে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস। এদের মধ্যে দু'য়েকজনের অবস্থা কিছুটা গুরুতর। তাই তাদের দেশে ফিরতে একটু দেরি হবে। এছাড়া বাকি সবাই আগামী দুই একদিনের মধ্যেই দেশে ফিরতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রদূত।
গত সোমবার নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস বাংলার একটি বিমান ৬৭ যাত্রী ও চারজন ক্রু নিয়ে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ জন নিহত হন। এর মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি।
নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসের হেড অব চ্যান্সেরি আল আলিমুল ইসলাম ইমাম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক লুৎফর কাদির লেলিনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি চিকিৎসক দল ইতোমধ্যে নেপালের পথে রওনা হয়েছেন। তারা অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসায় সহযোগিতা দেবেন।
এই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের দুই সদস্যও রয়েছেন, যারা পোড়া লাশের ডিএনএ পরীক্ষা করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করার কাজে নেপালকে সহায়তা করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আহতদের পরিচয় নিশ্চিত করার পর মরদেহের সংখ্যার ভিত্তিতে কোন দেশের কতজন মারা গেছেন, তা হিসাব করেছে নেপালি কর্তৃপক্ষ। সেই হিসেবেই বাংলাদেশের ২৬ জনের মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বিমানে আগুন ধরে যাওয়ায় পুড়ে যাওয়া অনেকের মরদেহ আলাদা করে শনাক্ত করা যায়নি।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০