দুর্গাপুর প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি - খবর ২৪ ঘণ্টা
প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ৬:০২ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ৬, ২০২১, ৬:০৮ পি.এম
দুর্গাপুর প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি
রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলার বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা স্কুলের মুল ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। এদিকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এনে ওই প্রতিষ্ঠানের ১২ জন শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার বেলা ১২ টার দিকে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা, কম্পিউটার ল্যাব ও শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেলে বেতন ও প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এমন সময় ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম উচ্চতর স্কেল বিষয়ে কথা উঠালে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে উভয়েরর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন সহকারি শিক্ষক জানান,সিনিয়র সহকারী শিক্ষক
বেতন স্কেলের জন্য রফিকুল ইসলাম, গোলেনুর ও হাতেম আলী প্রয়োজনিয় কাগজপত্রসহ অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদন করেন। প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন দুইজনের কাগজপত্র বাদ দিয়ে হাতেম আলীর কাগজপত্র স্বাক্ষর করে মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ বরাবর আবেদন করেন।সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে হাতেম আলীর উচ্চ তার স্কেল হয়ে যায়। এরই জের ধরে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেযায়। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসহনীয়
আচরণ, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বজনপ্রীতি অভিযোগ তুলে ধরেন ওই প্রতিষ্ঠানের ১২জন শিক্ষক। আর এর পেছনে মুল হোতা হচ্ছে ওই এলাকার প্রভাবশালী বখতিয়ারপুর ডিগ্রি কলেজেরর প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক মাকিম। ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলামসহ একাধিক শিক্ষক জানান, বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নিজ নামে প্রায় ৪৬ বিঘা জমি রয়েছে। যা বর্তমান প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন অদ্যবধি পর্যন্ত সম্পত্তির টেন্ডারের টাকার কোন হিসাব কাউকে দেন না। কোন কমিটি বা ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় শিক্ষকেরা স্কুলের জমির টাকার হিসাব চাইলে তাদেরকে মামলার ভয় দেখায়, চাকরীচ্যুত করবো বলে বার বার শোকজও করেন তিনি।
প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন ১৯৯৫ সালে বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার সার্টিফিকেট কিনে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। অনেক অর্থ খরচ করে তিনি সেই অভিযান থেকে বেঁচে যান এবং ধামাচাপা পড়ে যায়। এরপর ইংরাজী ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে স্কুলের ৪৬ বিঘা সম্পত্তির টেন্ডারের টাকা পয়সা ও হিসাব-নিকাশ কাউকে না দিয়ে স্কুল ব্যাংকের একাউন্টে জমা না রেখ তিনি নিজের খেয়াল-খুশি মতো অদ্যবধি পর্যন্ত নিজেই অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন।
স্কুলের অর্থ আত্মসাতের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে স্কুল কমিটিসহ ১১ জন শিক্ষক বাদী হয়ে উপ-পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ও সদয় অবগতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা। চেয়ারম্যান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহী। জেলা প্রশাসক রাজশাহী। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং সভাপতি বখতিয়ার পুর উচ্চবিদ্যালয় বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে প্রেরণ করা হয়।
এরপর এলাকার সচেতন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বাদী হয়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখে এক বছরের স্কুলের জমি টেন্ডারের ১২ লক্ষ ২৬ হাজার ৫৪৪ টাকার হিসেব না দিতে পারায় মহাপরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন সেগুনবাগিচা ঢাকা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ক্ষমতাশালী দলের স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় সকল অভিযোগ ধামাচাপা পড়ে যায়।
স্কুলে কমিটি ও ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় স্কুলের সকল শিক্ষক ২০২১ সালের জুলাই মাসের ১১ তারিখে ২০১৯- ২০ ও ২১ সালের অর্থাৎ ৩ বছরের স্কুলের সম্পত্তির টেন্ডারের টাকার হিসাব চাইলে, হিসাব না দিয়ে উল্টো করোনাকালীন সময় স্কুল ছুটি থাকা সত্বেও তিন দিনের অনুপস্থিত দেখিয়ে অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ১১ জন শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক শোকজ করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন শিক্ষক বাদী হয়ে আগস্ট মাসের ১১ তারিখে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এব্যাপারে বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল রানা বলেন,শিক্ষকদের দুই পক্ষ হতে অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত সবাইকে ডেকে নিয়ে সমাধান করা হবে।
জেএন
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০