রাজশাহীর দুর্গাপুরে চতুর্থ দফার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।, এছাড়া আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অভিযোগে পুলিশ বিভিন্ন এলাকা থেকে ২১ জনকে আটক করেছে। তাছাড়াও ভোটারদের মারধোর ও এক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীকে লাঞ্ছিত করা সহ বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে উপজেলার ৬ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হয়েছে।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল ৮টার দিকে ভোট শুরু হওয়ার পরই দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নের নামোদরখালী গ্রামে ভোট কেন্দ্রে ভোটদানে বাধা প্রদান করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আহসান হাবিবের লোকজন।
এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী রিয়াজুল ইসলামের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে মারধোরের ঘটনা ঘটে। পরে ওই ঘটনা নিয়ে দফায় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী রিয়াজুল ইসলামের চার কর্মী আহত হয়। ওই ইউনিয়নের বখতিয়াপুর ভোট কেন্দ্রেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনদের ভোট দানে বাধা প্রয়োগ করেন নৌকা সমর্থকের কর্মীরা। ওই ঘটনা নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে লাঠিসোঠা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারধোরের ঘটনায় ইমরান হোসেন (৩০) নামের এক কর্মী আহত হয়। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী রিয়াজুল ইসলামের কর্মী।
এদিকে, দুপুর ২ টার দিকে নওপাড়া ইউনিয়নের শিবপুর ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলামের লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল আলমের সমর্থকদের ভোট দিতে বাধা প্রয়োগ করেন। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল আলমের ৩ কর্মী মোস্তাফিজুর রহমান (২৮), মজসেদ আলী (৫৫) ও জাফর আলী (২৮) আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
ঝালুকা ইউনিয়নের বর্ধনপুর ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আকতার আলীর কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোজাহার আলী মন্ডলকে শারিরীক ভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠছে। ওই কেন্দ্রে বেলা ১১টার দিকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোজাহার আলী মন্ডল পৌছালে উত্তেজনা শুরু হয়। উত্তেজনার এক পর্যায়ে নৌকা সমর্থকের লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাজার আলী মন্ডলকে ধাক্কা দিলে সে মাটিতে পড়ে যায়। ওই ইউনিয়নের আন্দুয়া ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদানে বাধা দেওয়ায় ঘটনায় মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাহার আলী মন্ডলের কর্মী আনসার আলী (৪০) আহত হয়। এছাড়াও কিসমত গণকৈড় ইউনিয়নের বড়ইল ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টার অভিযোগে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ও তার সহযোগী আব্দুস সালাম (৪০) ও দুর্গাপুর পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক রাজুর (২৫) উপর আড়ইল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আব্দুস সালামের নামের এক ব্যাক্তির মাথা ফেটে যায়।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হাশমত আলী বলেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অভিযোগে ঝালুকা ইউনিয়ন থেকে একজন, কিসমত গণকৈড় ইউনিয়ন থেকে ৪ জন, পানানগর ইউনিয়ন থেকে ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আটককৃতদের থানা হেফাজতে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে আটককৃতদের বিরুধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওসি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটানিং কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, অত্যন্ত সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ ইউপি নির্বাচন সম্পূন্ন হয়েছে। এই ইউপি নির্বাচনে কোন প্রার্থীর কোন অভিযোগ নেই।
বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের বিষয়ে জানতেই চাইলে ইউএনও ও রিটানিং কর্মকর্তা আরও বলেন, বড় কার্যক্রমে ছোট খাটো দু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতে পারে। তবে উপজেলার ছয় ইউনিয়নে বড় কোন অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটে নি।
বিএ/
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০