দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহী দুর্গাপুরে নিউজিম নামক ছত্রাকনাশক স্প্রে করে ১৩ জন চাষির মাথায় হাত পড়েছে। প্রায় সবগুলো চাষিই অন্যের জমি লিজ নিয়ে এ ফুলকপি চাষ করেছিলেন। নিউজিম নামক ছত্রাকনাশক ব্যবহার করে প্রায় ১৫ বিঘা জমির ফুলকপি পুড়ে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে চাষিদের।
উপজেলার মঠ চুনিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা এঘটনায় ক্ষতিপুরণ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ৪ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়াও উপজেলা কৃষি অফিসেও অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার উপজেলা কৃষি অফিসার সাহানা পারভীন লবনী ফসলে মাঠ পরিদর্শন করেন।
জানা গেছে, উপজেলার মঠ চুনিয়াপাড়া মাঠে ১৩জন চাষি জমি লিজ নিয়ে ফুলকপি চাষ শুরু করেন। গত ১৬ অক্টোবর চাষিরা ফলন ভালো পাওয়ার আশায় গগণবাড়িয়া বাজার থেকে সাতাহারের সার-কীটনাশকের দোকান মেসার্স মাহামুদ এন্টার প্রাইজ থেকে ব্লেসিং এগ্রোভেট ইন্ডাস্ট্রীজ লিমিটেডএর নিউজিম নামক ছত্রাকনাশক ক্রয় করে ফুলকপিতে স্প্রে করেন। এরপর সেই ফুলকপিগুলো ধীরে ধীরে ফুলের ভেতর থেকে পচন দেখা দিতে থাকে। এক পর্যায়ে সেই পচনে পুরো ফুলকপি পঁচে নষ্ট হয়ে যেতে থাকে। বর্তমানে পুরো ফুলকপি ফসলের মাঠ পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে।
এদিকে ক্ষতিপূরণ চেয়ে চাষিরা সেই সার-কীটনাশক ব্যবসায়ী ব্লেসিং এগ্রোভেট ইন্ডাস্ট্রীজ লিমিটেডের ডিলার সাতাহার আলীর কাছে তিনি প্রথমে ক্ষতিপুরন দিতে হন। বর্তমানে ভুক্তভোগী চাষিদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষি শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে ফুলকপি রোপন করেন। কপিগুলো কেবল সাইজ হয়ে উঠছিল। বাজারজাতের পূর্বে তিনি মিউজিয়াম নামের ছত্রাক নাশক স্প্রে করেন। স্প্রের ১২ ঘণ্টা পরে তিনি জমিতে এসে দেখেন তার জমিতে থাকা ফুলকপি গুলো পচন ধরেছে। এরপর গত এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পন্ন ফুলকপি নষ্ট হয়ে যায়।
কৃষক সেকেন্দার আলী বলেন, আমি এনজিও থেকে কিস্তি তুলে ২ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। চারা কিনে দুই বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলাম। এই পর্যন্ত আমার প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। সবে মাত্র কপিগুলো তোলার সময় হয়ে এসেছিলো। এমন সময় আমি ফলন ভালো পাওয়ার আশায় সবার দেখাদেখি আমিও মিউজিয়াম নামক ছত্রাক স্প্রে করি। এই মিউজিয়াম ছত্রাকনাশক ব্যবহার করেই আমি পুরো পথে বসে গেছি। জমির পুরো ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এক টাকারও ফসল বিক্রি করতে পারিনি। আমি এর ক্ষতিপূরণ চাই।
এবিষয়ে ব্লেসিং এগ্রোভেট ইন্ডাস্ট্রীজ লিমিটেডের ডিলার সাতাহার আলীর সাথে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গেলে তার প্রতিষ্ঠান বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার সাহানা পারভীন লাবনী বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে কোনো কিছু স্প্রে করার কারনে এমন ঘটনা ঘটেছে। আমরা আলামত সংগ্রহ করেছি। পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে। ল্যাবের রিপোর্টের ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা শারমিন বলেন, এমন ঘটনায় কৃষকরা আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএ..
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০