তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ার প্রেক্ষিতে পেট্রোল পাম্প মালিকদের তেল উত্তোলন ও সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণায় রাজধানীর রিফুয়েলিং স্টেশনে ভিড় বাড়ছে। গ্রাহকদের মাঝে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে তেল সংগ্রহ করতে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। রাজধানীর পরিবাগে গ্রাহকদের লম্বা লাইন দেখা গেছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আনোয়ার হোসেন। অফিসে নিয়মিত মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, শুনলাম কাল থেকে নাকি পাম্পে তেল দেয়া বন্ধ থাকবে। তাই রাতেই তেল ভরে নিচ্ছি। যাতে কয়েকদিন আর চিন্তা করতে না হয়।
তেল নিতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ শুনলাম, পেট্রোল পাম্প মালিকরা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছে। তাদের দাবি মানা না হলে নাকি তেল সরবরাহ বন্ধ থাকবে। তাই তেল নেওয়ার জন্য এসেছি।
পেশায় পাঠাও চালক ইকবাল হোসেন বলেন, পাম্পে তেল দেয়া বন্ধ হয়ে গেলে তো ঝামেলা। আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে।
এদিকে গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়ালেও মালিক সমিতির একাংশের পক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাম্পে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
এ প্রসঙ্গে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর আসলাম বলেন, মূলত পেট্রোল পাম্প সমিতির দুটো ভাগ আছে। যে অংশটি বড়, তারা তেল উত্তোলন স্বাভাবিক রাখবে। সুতরাং পেট্রোল পাম্পে তেল সরবরাহে কোনো বিঘ্নতা ঘটবে না।
মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৯ তারিখ বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে পেট্রোল পাম্প মালিকদের সব দাবি দাওয়া বাস্তবায়নে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পেট্রোল পাম্প মালিকদের সকল প্রকার দাবি-দাওয়া পূরণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আশ্বস্ত করা হয়। অতএব, ওই সময়ের মধ্যে সব ডিপো থেকে তেল উত্তোলন স্বাভাবিক রাখার জন্য সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।
এদিকে তিন দফা দাবিতে রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন পেট্রোল পাম্প মালিকরা।
দাবির মধ্যে রয়েছে- জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা, জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংকলরির অর্থনৈতিক জীবনকাল ৫০ বছর করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের কমিশন এজেন্ট হিসেবে গেজেট প্রকাশ করা।
এনিয়ে একযোগে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ট্যাংকলরী ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরী শ্রমিক কল্যাণ সমিতি।
সংগঠনের নেতারা জানান, জ্বালানি তেল বিক্রিতে কমিশন বৃদ্ধিসহ ৩ দফা দাবি পূরণে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সরকারকে সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই সময় পার হয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে। তাই আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সভা থেকে।
পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির মহাসচিব মিজানুর রহমান রতন জানান, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। কোথাও যাওয়ার উপায় নেই আমাদের। এখন দাবিসমূহ না মানলে রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে তেল উত্তোলন বন্ধ রাখব আমরা।
বিএ/
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০