নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর তানোর উপজেলার কচুয়া জিৎপুর গ্রামে পুত্রবধূ সোনিয়া আক্তার রুমি শাশুড়িকে চাপাতি দিয়ে জবাই করে হত্যার পর নিজে আহত হওয়ার ভান করে মেঝেতে পড়ে থাকে। রুমি রাজশাহীর আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ।সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ৩ অক্টোবর রাত আনুমানিক ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে রাজশাহীর তানোর থানাধীন কচুয়া জিৎপুর গ্রামস্থ জহুরা বেগমের বাড়িতে তাকে কে বা কারা জবাই করে হত্যা করে এবং তার পুত্রবধু রুমিকে গুরুতর জখম করে বলে পুলিশের কাছে খবর আসে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ও আহতকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। হত্যার ঘটনায় পরে নিহত জহুরা বেগমের ভাই মোজাফপর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে তানোর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। বিষয়টি পর্যবেক্ষণের জন্য তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পুলিশের তদন্তে হত্যাকা-ের ঘটনাটি সন্দেহজনক মনে
হওয়ায় সোনিয়াকে ৭ তারিখ সকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। প্রায় ৩/৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসল রহস্য বের হয়ে আসে।পুত্রবধূ সোনিয়া নিজেই তার শাশুড়িকে হত্যা করেছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। সোনিয়া পুলিশকে জানায়, তার শাশুড়ি জহুরা বেগমের সাথে তার আগে থেকেই ঝগড়া-বিবাদ হতো। ঘটনার দিন রাত আনুমানিক পৌনে ৯টার দিকে শাশুড়ি জহুরা বেগমের সাথে তার ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে তার শাশুড়ি তাকে মারতে আসে তখন রুমিও শাশুড়িকে মারতে যায়। একপর্যায়ে রুমি তার উঠানে থাকা মোটা কাঠের ডাল দিয়ে শাশুড়ির নাক মুখে জোরে আঘাত করলে জোহুরা ঘরের মেঝেতে পড়ে যায়। তখন রুমি জহুরা বেগমকে টেনে খাটের উপর তুলে নিয়ে জেদের বশবর্তী হয়ে আরোও একটি জোরে আঘাত করে। আঘাতের পর ভয় পেয়ে যায় যে যদি তার শাশুড়ি ঘটনাটি স্বামীকে বলে দেয় তাহলে তার এ বাড়িতে আর থাকা হবে না। তাই কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর শাশুড়িকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ হত্যা করলে শাশুড়ি আর কাউকে কিছু বলতে পারবে না। তখন সে ঘরের মধ্যে ফ্রিজের উপর থাকা বড় চাপাতি দিয়ে জহুরা
বেগমের পাশে হাটু গেড়ে বসে তাকে জবাই করে। জবাই করার সময় তাড়াহুড়ায় তার বাম হাতের আঙ্গুল কেটে যায়। এরপর জহুরা বেগমের মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে বাড়ির গেটের কাছে গিয়ে বাচাঁও বাচাঁও বলে চিৎকার করে এবং অজ্ঞান হওয়ার ভান করে মেঝেতে পড়ে থাকে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি থানা পুলিশ জানায়। তানোর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রুমি হত্যাকা-ের বিষয়টি স্বীকার করলে তাকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, জোহুরা বেগমের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের পূবালি ব্যাংকের একটি শাখায় গার্ডের চাকুরি করেন। ছেলে বাইরে থাকায় মৃত জোহুরা বেগম ছেলের বউ বাড়িতে থাকতেন।
খবর ২৪ ঘণ্টা/এমকে
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০