পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়ায় বানেশ্বর ও ঝলমলিয়া হাটের জায়গা প্রভাবশালীরা দখল নিয়ে নিজেস্ব গোডাউন তৈরি করেছে। আর হাটের কেনা-বেচা করা হয় মহাসড়কের উপর। প্রতি সপ্তাহের ৪দিন এই দু’হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পাশাপাশি সাধারণ পথচারী ও যানবাহন যাত্রীদের দীর্ঘ সময় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে কর্তৃপক্ষ হাট দু’টি ইজারা দিয়ে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা আয় করা হলেও কোনো প্রকার তদারকি করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, বানেশ্বর হাট ও পুঠিয়া পৌরসভাধিন ঝলমলিয়ার হাট উত্তরবঙ্গের প্রথম শ্রেণীর হাটের মধ্যে রয়েছে। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানাগেছে বানেশ্বর হাট প্রায় সাড়ে ১১ একর জমির উপর অবস্থিত। এই হাট সপ্তাহে দু’দিন (শনি-মঙ্গলবার) বসে। অপরদিকে ঝলমলিয়ার হাট প্রায় ৬ একর জমির উপর (সোম-বৃহস্পতিবার) বসে। সরকারী বিধি মোতাবেক হাটের জায়গায় কোন প্রকার স্থায়ী ঘর নির্মাণ এবং দখল অবৈধ। কিন্তু এলাকার প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা হাটের জায়গায় দোকান
ঘর ও গোডাউন নির্মাণ করে স্থায়ী ভাবে তাদের নিজেস্ব ব্যবসা পরিচালনা করছেন। অনেকেই আবার গোডাউন ঘর গুলো ভাড়া ও বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। যার ফলে হাটের জায়গা ক্রমেই বে-দখল হওয়ায় স্থানীয় কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসলাদি বিক্রির জন্য মহাসড়কের দু’পাশে বানেশ্বর হাটে প্রায় ২ কিঃ মিঃ এবং ঝলমলিয়া হটে ১ কিঃ মিঃ সড়ক জুড়ে কেনাবেচা করতে হচ্ছে। পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের নজরদারির অভাবে ২টি হাটের জায়গা প্রতিনিয়ত বেদখল হয়ে যাচ্ছে।
বানেশ্বর হাটে আসা স্থানীয় কৃষক মোতালেব হোসেন বলেন, সার্বক্ষনিক এই মহাসড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের যানবাহন চলাচল করে। আর রাস্তার সাথে কেনাবেচা করার সময় আমরা খুবই আতঙ্কে থাকি। অথচ আমাদের প্রতিমণ মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা খাজনা দিতে হয়।
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা কাচামাল ব্যবসায়ি লিয়াকত শেখ বলেন, হাটের জায়গা স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে রেখেছেন। তারা বড় বড় গোডাউন তৈরি করে নিজেরা ভাড়া খাটাচ্ছে। আবার কেউ মোটা অংকের অর্থে বিক্রি করছে। অথচ প্রতিটি মালামালে নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আমাদেরই চরম দূভোগ পোহাতে হচ্ছে।
পবা হাইওয়ে থানা (শিবপুরহাট) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপপরিদর্শক লুৎফর রহমান বলেন, সপ্তাহের ৪ দিন বানেশ্বর ও ঝলমলিয়া হাট ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সাথে বসায় সেখানে যানজট লেগে যায়। এতে মাঝে মধ্যে সাধারন পথচারী, জরুরী রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীদের যাতায়াতের চরম ব্যঘাত ঘটছে। আমাদের লোকজন দু’টি হাটেই সার্বক্ষনিক তদারকি করেন। আমরা নিয়মিত ইজারদার ও হাট কর্তৃপক্ষেকে বলছি তারা যেনো মহাসড়কের সাথে কেনা-বেচা না করতে দেন।
তবে পৌর মেয়র রবিউল ইসলাম রবি বলেন, এখন পৌরসভার নির্বাচন চলছে। আমি আবারো ক্ষমতায় আসতে পারলে আগামী এক বছরের মধ্যে ঝলমলিয়া হাট দখলমুক্ত করা হবে। পাশাপাশি পৌরসভার পক্ষ থেকে গোডাউন ভেঙ্গে নির্ধারিত পরিসরে ঘর তৈরি করে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। মুঠোফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও এর কোনো উত্তর তিনি দেননি।
জেএন
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০