জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল রেল গেট এলাকায় বাস ও ট্রেনের যে ভয়াবহ দুর্ঘটনা শনিবার ভোরে হয়েছিল তাতে নিহতদের তালিকায় ছিল জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আটুল গ্রামের আপন দুই ভাই সরোয়ার হোসেন (৪০) ও আরিফুর রহমান রাব্বি (২০)।
জয়পুরহাটের পুরানাপৈল রেল গেটে ভয়াবহ বাস ট্রেন দুর্ঘটনায় বাসে থাকা ১০ জন যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন, হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও ২ জন, আর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩ জন।
ওই অসহায় মৃত্যুর মিছিলে ছিলেন একই পরিবারের দুই ভাই সারোয়ার ও রাব্বী। তারা ছিলেন আটুল গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আলতাফ হোসেনের ছেলে। আলতাফ হোসেনের ওই ছেলে ছাড়া আর কোনও সন্তান নেই। বড় ছেলে সারোয়ার গ্রামীণ পশু চিকিৎসক আর ছোট ছেলে রাব্বী সবে এইচএসসি পাস করেছেন।
বাবা আলতাফ হোসেন আহাজারি করতে করতে বলেন, একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ডিপ্লোমা কোর্সে এ ভর্তির জন্য ছোট ভাই রাব্বীকে সঙ্গে নিয়ে বড় ভাই সরোয়ার গত বুধবার ঢাকা যান। ভর্তি শেষে দুই ভাই রাতে ঢাকা থেকে পষ্ণগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়ির উদ্দেশে জয়পুরহাট স্টেশনে পৌঁছে। পরে হিলিগামী বাঁধন নামে যাত্রীবাহী বাসে চড়ে পাঁচবিবি যাওয়ার পথে ওই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
দুই ছেলেকে হারিয়ে বাবা আলতাফ ও মা আম্বিয়া খাতুন বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। সান্ত্বনা দিতে আসা গ্রামবাসীরাও নির্বাক প্রায়।স্থানীয়ভাবে পারিবারিক কবরস্থান থাকলেও শুধু নিজের পরিবারের লোকদের জন্য বাড়ির সামনে ৭ শতক জমি কেনেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আটুল গ্রামের আলতাফ হোসেন। সেই জমিতে প্রথম দাফন করা হলো তার দুই ছেলেকে।
আলতাফ হোসেন বলেন, কবরস্থানের জায়গার জন্য সেখানে তাদের দাফনের আগে আমার কেন দাফন হলো না? একই গ্রামের ছালেহা বেগম, মাহমুদুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন মাস্টার, মামুনুর রশিদ ও সোহেল জানান, আলতাফ ও আম্বিয়া খাতুনের মাত্র দুই সন্তানই। সুখী পরিবারে এখন বিশাদের ছায়া, সন্তান শোকে বাবা আর মায়ের যে কি হবে তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ বলতে পারবে না।
জেএন
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০