লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধিঃ ট্রেনের ইঞ্জিনের তেল চুরি, এটা কোন নতুন ঘটনা নয়। আমাদের দেশে এটা নিত্য দিনের ঘটনা। দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে এ তেল চুরির ঘটনা ঘটে আসছে সেই স্বাধীনতার পর থেকেই। মাঝে মাঝে এসব পয়েন্টে অভিযান চলে, কখনও কেউ ধরা পড়ে আবার কখনও অভিযান ব্যার্থ হয়। তবে যাই হোক এক যায়গায় অভিযান চললে পরের কয়েক দিন অন্য পয়েন্টে তেল বিক্রি হয়।
নাটোরের লালপুর ও ঈশ্বরদী উপজেলার আব্দুলপুর, আজিমনগর ও ঈশ্বরদী রেল স্টেশনের মধ্যে এরকম কমপক্ষে আট-দশটি পয়েন্ট আছে। যেখানে নিয়োমিত ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে তেল বের করা হয় এবং বিক্রি করা হয়। তবে যত বারই অভিযান হয় সেসব অভিযানে ধরা পড়ে শুধু মাত্র ক্রেতা অর্থাৎ যারা ক্রয় করে বাজারজাত করে তারা। কিন্তু বরাবরই ধরা ছোয়ার বাইরে রয়ে যায় বিক্রেতা অর্থাৎ ট্রেনের ইঞ্জিনের চালক, পরিচালক,নিরাপত্তা কর্মীরা অর্থাৎ রেলওয়ে পুলিশ। এখন আমার প্রশ্ন আসলে চোর কে? ক্রেতা না বিক্রেতা? চুরি করে কে? ট্রেনের চালক ? না যারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে তারা।
চোরের সংগাই বা কি? সাধারণত কোন জিনিস না বলে অর্থাৎ লোক চক্ষুর অন্তরালে সরিয়ে নেওয়ার নামই হলো চুরি। আর যে চুরি করে সে হলো চোর। এবার দেখা যাক ট্রেনের তেল আসলে চুরি করে কে? একটি ট্রেন কোন নিদ্রিষ্ট স্থান থেকে অপর একটি নিন্দ্রিষ্ট স্থানে পৌছে যাওয়ার পর চালক দেখে তাকে যে তেল দেওয়া হয়েছে তা থেকে অনেক তেল রয়ে গেছে তখন চালক ও সংশ্লিষ্ট সকলে সে তেল ইঞ্জিন থেকে বের করে লোক চক্ষুর অন্তরালে চোরা কারবারীর কাছে বিক্রি করে দেয়।
তখন চোরা কারবারীরা সে তেল ক্রয় করে নিয়ে গিয়ে বাজারজাত করে। তাহলে আসল চোর হলো চালক ও ট্রেনের পরিচালক সহ সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু তারা তো ধরা পড়েনা? আসলে তারা ধরা পড়েনা না তাদের ধরা হয় না কোনটি সঠিক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক তেল চোরাকারবারীদের সাথে থা বলে জানা যায়, চালকরা তেল না বিক্রি করলে তারা তেল পাবে না, আসল চোর তো চালক কিন্তু চালককে না ধরে আমাদের ধরা হয়। আর আইনের মার প্যাচে কয়েকদিন পরেই জামিনে বের হয়ে আসে চোরা কারবারীরা। আসলে আমাদের দেশে সব কিছু চলে উল্টো নিয়োমে।
চুনো পুটিরা ধরা পড়ে আর রাঘব বোয়ালরা ঘুরে বেড়ায়। যে ট্রেনের তেল বিক্রি হয় সে ট্রেনের চালক,পরিচালক ও নিরাপত্তা কর্মীদের যদি আটক করা হয় এবং আইনে সোপর্দ করা হয় তাহলে তো আর চুরি হওয়ার কথা নয়।
উল্লেখ্য উপজেলার আব্দুলপুর ও আজিম নগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ের ট্রেনের ইঞ্জিনের চোরাই তেলের জমজমাট ব্যবসা চলে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। ইতিপূর্বে কয়েকবার অভিযান চালিয়ে তেলসহ চোরা কারবারিদের আটক করলেও কয়েকদিন পরেই জামিনে বের হয়ে এসে আবার ব্যবসা শুরু করে। এমনকি চোরাকারবারিরা জেলে থাকা কালিন সময়েও তাদের প্রতিনিধিরা ব্যবসা চালিয়ে যায়। তবে ইঞ্জিনের তেল বিক্রির প্রধান হোতা ইঞ্জিনের চালক ও ওই ট্রেনের পরিচালকরা বার বারই ধরা ছোয়ার বাইরেই রয়ে যায়। তাদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারলে তেল চোরকারবারী কিছুটা কমবে বলে আমার ধারনা।
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০