মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে প্রতিবেশী হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি নয় মার-এ-লাগোর বাসিন্দারা। হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর তিনি তার প্রাইভেট ক্লাব এই মার-এ-লাগোতে উঠতে চাইছেন পরিবারসহ।তার নিকটতম প্রতিবেশী বলেছেন, আমাদের প্রতিবেশী হিসাবে আপনাকে চাই না। এখানে নয়, অন্য কোথাও অবসর যাপন করুন।
ফ্লোরিডা রাজ্যের প্লাম বিচ শহরে মার-এ-লাগোর অবস্থান। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মালিকানাধীন এই প্রাইভেট ক্লাব। বহু পরিবারের বসবাস এখানে। প্রায় ৫শ' সদস্য এই ক্লাবের। অনেকগুলো বিল্ডিং ব্লকে বিন্যস্ত মার-এ-লাগো। অনেকটা প্রাইভেট অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের মতো। সমুদ্র লাগোয়া নয়নাভিরাম এবং সুশোভিত স্থান।গতকাল মঙ্গলবার প্লাম বিচ শহর কর্তৃপক্ষের কাছে এক লিখিত আর্জিতে এই প্রাইভেট এস্টেটের অধিবাসীরা এমন দাবি জানিয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ১৯৯০ সালে স্বাক্ষরিত এক
চুক্তির ফলে মার-এ-লাগোয় তার বসবাসের অধিকার হারিয়েছেন। এই দাবির কপি দেয়া হয়েছে ইউএস সিক্রেট সার্ভিসকেও। এস্টেটের বাসিন্দাদের পক্ষে তাদের আ্যটর্নি এই দাবিনামা পেশ করেন। এ নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট একটি রিপোর্ট করেছে। এই আ্যটর্নি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, যে কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে অধিবাসীদের পক্ষে এ ব্যবস্হা নেয়া হয়েছে। তিনি মার-এ-লাগোর বাসিন্দা ডিমোস পরিবারের পক্ষে এই দাবি পেশ করেন নগর কর্তৃপক্ষের কাছে।
কেননা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট এখানে স্হানান্তরিত হয়ে এলে পরে তাকে আবার উচ্ছেদের ঝামেলায় জড়াতে হতে পারে। আরেক প্রতিবেশী গ্লেন জাইটজ বলেন, এটা কোনভাবেই বৈধ পন্থা নয় যে, একটি জায়গাকে ক্লাব এবং বসত বাড়ি হিসাবে ব্যবহার করবেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র, ট্রাম্পের স্হানীয় আইনজীবী অথবা প্লাম বিচের মেয়র কেউই ওয়াশিংটন পোস্টের আহ্বানে কোনো সাড়া দেননি। মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস কোনো মন্তব্য করেনি।
গত কয়েক বছর ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মার-এ- লাগোতে ঘন ঘন সফরের ফলে ট্রাফিক জ্যাম ও স্ট্রিট ব্লক করে রাখায় চারপাশের প্রতিবেশীরা তার ওপর তিক্ত-বিরক্ত। এর আগে ক্লাবের রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায় প্রতি বছর। ক্লাব সদস্যরা তখন একটি চুক্তির মাধ্যমে ক্লাবের গেস্ট হাউসে কেউ একনাগাড়ে সাত দিন এবং বছরে ২১ দিনের বেশি অবস্থানকে নিষিদ্ধ করে। পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে তার অ্যাটর্নি ১৯৯৩ সালে প্লাম বিচ টাউনহল কাউন্সিল মিটিংয়ে ট্রাম্প ওখানে থাকবেন না বলে অঙ্গিকার করেন।
ট্রাম্প বেশ কয়েকবার তার চুক্তি ভঙ্গের চেষ্টা করেন। তার চার বছরের প্রেসিডেন্সির সময়ে তিনি ৩০ বার মার-এ-লাগোয় যান।সেখানে কমকরে ১শ ৩০ দিন অতিবাহিত করেন। সেখানে প্রেসিডেন্টের জন্য হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয় যা এই চুক্তির লঙ্ঘন। ট্রাম্প গত বছর নিউইয়র্ক থেকে ফ্লোরিডায় তার ভোট তুলতে হোয়াইট হাউস ওয়াশিংটনের ঠিকানা ব্যবহার করতে চান। কিন্তু ফ্লোরিডার আইনে তা করতে না পারায় তিনি এই মার-এ-লাগোর ঠিকানা ব্যবহার করেন। তিনি এর আগে মার-এ-লাগোকে তার শীতকালীন হোয়াইট হাউস বলেও ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প বছরে এখান থেকে কয়েক মিলিয়ন ডলার আয় করে থাকেন। ট্রাম্পের এই প্রতিবেশীরা তাদের লিখিত দাবিতে উল্লেখ করেন, ওয়েস্ট প্লাম বিচ এলাকায় অনেক লাভলী এস্টেট বিক্রির অপেক্ষায় আছে। আমরা আশা করছি, প্রেসিডেন্ট তার প্রয়োজন মেটাবে এমন একটি এস্টেট খুঁজে নেবেন।
জেএন
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০