খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক : টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিতে এক রোহিঙ্গাকে খুন করেছেন আরেক রোহিঙ্গা। এ ঘটনায় জড়িত এক রোহিঙ্গাসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশি তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। চার আসামি গতকাল বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। আসামিরা হলেন রোহিঙ্গা শফিক আলম, তাঁর সহযোগী মো. আরফাত, রাজু দাশ ও নুর আলম। এঁদের মধ্যে শফিক নগরের ডবলমুরিং থানার চৌমুহনী এলাকায় কাউয়া বিরিয়ানি বিক্রি করেন। বাকি তিনজন ওই এলাকার বাসিন্দা। এক দশক আগে মিয়ানমার থেকে এসে শফিক চট্টগ্রামে বসবাস শুরু করেন।
গত শনিবার রাতে নগরের খুলশী থানার পাহাড়তলী রেলওয়ে জাদুঘরের পাশে ঝোপের মধ্য থেকে ৫৪ বছর বয়সী অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম পরিচয় শনাক্ত করেন। লাশটি জানে আলম নামের এক রোহিঙ্গার। কুতুপালং ক্যাম্পে তাঁরা থাকেন। এক আত্মীয়ের চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন। সেখান থেকে জানে আলম নিখোঁজ হন। এই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
ঘটনার শুরু থেকে মামলাটি তদন্ত করেন খুলশী থানার পরিদর্শক তদন্ত মোহাম্মদ কবির হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আসামি শফিকের বোনকে নিহত জানে আলমের এক ভাই বিয়ে করেন। সেই সুবাদে জানে আলমের স্ত্রী রহিমা বেগমের সঙ্গে মুঠোফোনে প্রায়ই কথা বলতেন শফিক। জানে আলমের কিছু টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকার সঞ্চিত আছে। বছর দুয়েক আগে তিনি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে আসেন। এখানে ধরাধরি হওয়ায় ফিরে যান কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে। ২৩ বছর বয়সী আসামি শফিক জানে আলমের টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকারের লোভে জানে আলমের স্ত্রী রহিমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এ প্রস্তাবে রাজি হননি রহিমা। একপর্যায়ে শফিকের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন।
রহিমার বড় বোন বেলোয়ারা খাতুনকে চিকিৎসার জন্য গত ৩০ মার্চ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সঙ্গে আসেন রহিমা ও তাঁর স্বামী জানে আলম। খবর পেয়ে শফিক হাসপাতালে আসেন। তাঁর বাসায় দুই দিন রাখেন জানে আলমকে। পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্বর্ণালংকার ও টাকা হাতিয়ে নিতে জানে আলমকে সরানোর জন্য তাঁর ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিরিয়ানি খেতে আসা স্থানীয় তিন বখাটে যুবককে নিয়ে ৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেটে যান। ওই দিন রাত ১০টার দিকে জানে আলমকে নিয়ে শফিক তাঁর বাসার উদ্দেশে রওনা হন। তাঁর পেছনে ছিলেন তিন যুবক। শফিক জানে আলমকে পাহাড়তলী জাদুঘরের পাশে ঝোপের মধ্য নিয়ে যান কৌশলে। পরে সেখানে গিয়ে তিন যুবক জানে আলমকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখান। চিৎকার দিলে শ্বাস রোধ করে চারজনে মিলে জানে আলমকে খুন করেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁরা আগ্রাবাদ চলে যান। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, স্বামীকে হত্যা করে তাঁর স্ত্রী রহিমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন শফিক। পরে স্বর্ণালংকার ও টাকা হাতিয়ে নিতেন। শফিক এর আগে দুজন বয়স্ক নারীকে বিয়ে করে তাঁদের সম্পত্তি আত্মসাৎ করে তালাক দেন। মিয়ানমারের এই রোহিঙ্গা নাগরিক ভাসমান হিসেবে চট্টগ্রামে বসবাস করতেন।
আর/এস
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০