জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারণে জিম্মি হয়ে পড়েছেন জেলার পাঁচটি পৌরসভার নাগরিকরা। এতে রাতে অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট অন্ধকারে থাকাসহ শহরের বর্জ্য অপসারনের অভাবে বাড়ছে জন দূভোর্গ।
সরেজমিনে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা ও পেনশনসহ অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার দাবিতেই কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পৌরসভা সার্ভিস এসোসিয়েশনের ব্যনারে জয়পুরহাট সদর, পাঁচবিবি, আক্কেলপুর, ক্ষেতলাল ও কালাই এই ৫টি পৌরসভায় ৭২ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের কর্মবিরতি গত রোববার (২৮ জানুয়ারী) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়, আর মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারী) সন্ধ্যা ৬ টায় তা শেষ হওয়ার কথা।
এ অবস্থায় রাতে সড়কের বাতিগুলো না জ্বালানোর কারণে পৌর শহরগুলোর অধিকাংশ রাস্তাঘাট অন্ধকারে থাকে এবং রাস্তা-ঘাট, বাসা-বাড়ির বর্জ্য পরিষ্কার না করার ফলে দুষিত হয়ে পরেছে শহরগুলোর পরিবেশ। এ ছাড়াও কর্মবিরতি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পৌরভবনগুলির মূল ফটকে তালা মেরে সকল নাগরিক সেবা বন্ধ করে দিয়েছে আন্দলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে স্থবির হয়ে পরে পৌরসভার প্রাত্যহিক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সহযোগিতা না করায় মেয়র, কাউন্সিলররা পৌরভবনে এসেও কাজ করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন মেয়র-কাউন্সিলররা।
জয়পুরহাট পৌর সভার বিশ্বাসপাড়া মহল্লার ওমর ফারুখ রবিন, পাঁচবিবি উপজেলার মাতাইশ চৌধূরী পাড়া মহল্লার শিক্ষক তিথি চৌধুরী, কালাই পৌরসভার তালুকদার পাড়া মহল্লার ব্যবসায়ী শামিম আহম্মেদ, ক্ষেতলাল পৌরসভার সদর রাস্তার ব্যবসায়ী আব্দুল আলীম ও আক্কেলপুর পৌরসভার স্থানীয় সাংবাদিক নিয়াজ মোরশেদ সহ বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার সাধারন মানুষ অভিযোগ করেন, পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাগাতার কর্মবিরতির কারনে কার্যত নাগরিকরা 'জিম্মি' হয়ে পরেছেন। রাতে শহর জুরে অন্ধকার থাকায় পৌর শহরগুলো ভুতুড়ে নগরে পরিণত হয়। সন্ধ্যার পরে প্রায় ফাঁকা হয়ে যায় শহর। এতে করে অন্ধকার রাস্তা দিয়ে বাড়ি যেতে শহরবাসীকে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হয় রিকশা চালকদের। অন্ধকারে চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারীর ভয়ে শহরবাসী নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার না করায় পৌরশহরগুলোর যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনার স্তুপ হয়ে পরে রয়েছে। ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করায় ময়লা-আবর্জনার গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পৌরবাসীন্দারা। এতে স্বাস্থ্যহানীর আশঙ্কাসহ পরিবেশ দুষিত হচ্ছে বলেও আশঙ্কার কথা জানান পৌর নাগরিকগন।
জয়পুরহাট পৌরসভা চত্বরে ৫টি পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীচারীরা অবস্থান নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মবিরতি কর্মসুচি পালন করছেন। কর্মবিরতি পালনকালে বক্তৃতা করেন- পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক রবিউল হাসান রুপক, রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি মাহমুদুল ইসলাম, জয়পুরহাট ইউনিটের সাধারন সম্পাদক আব্দুল করিম, পাঁচবিবি ইউনিটের সভাপতি আব্দুল মজিদ, কালাই ইউনিটের সভাপতি জুলহাস উদ্দিন, ক্ষেতলাল ইউনিটের সভাপতি কৃষ্ণ চন্দ্রসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বলেন, আমাদের দাবি আদায়ে আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য রাতের বেলা সকল রোড লাইট বন্ধ সহ সকল নাগরিক সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকার অবিলম্বে আমাদের দাবি না মেনে নিলে আমরা আরো কঠর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হব।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, পাঁচবিবি পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ৫টি পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরগন জানান, পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের কারনে তারা অফিস করতে পারছেন না। এ যাবৎ পর্যন্ত পৌরসভা থেকে শত ভাগ বেতন-ভাতা দেওয়ার নিয়ম থাকায় অল্প আয়ের পৌরসভাগুলো এতে হিমশিম খাচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার কর্তৃক আংশিক বেতন ভাতা দেওয়া হলেও পৌরসভাগুলির দায়ভার অনেকটাই লাঘব হবে বলেও অভিমত দেন তারা।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০