খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপনে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে জনসভায় ভাষণ দেয়া শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের হাইলাইটস
* এখন যেটি শিশুপার্ক সেখানে মঞ্চ ছিল। সেখান থেকে জাতির পিতা ঘোষণা দেন ‘এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ সেই ডোকে সারা দিয়েছিল সারাদেশের মানুষ।
* একাত্তর সালের যুদ্ধ ছিল জনযুদ্ধ। দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষ সে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আর একশ্রেণির মানুষ হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে, মা-বোনকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল।
* দক্ষিণ এশিয়ার বুকে ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করে জাতির পিতার নেতৃত্বে।
* মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। দেশের মানুষকে যখন তিনি আত্মপরিচয়ের সুযোগ করে দিচ্ছিলেন তখনই এলো চরম আঘাত।
* দুর্ভাগ্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে ক্ষমতায় আসে স্বাধীনতাবিরোধীরা।
* এই ভাষণ বাজানোর কোনও অধিকার ছিল না। যেখানেই বাজানো হতো সেখানে তারা বাধা দিতো। আমি স্যালুট করি আওয়ামী লগের শত শত নেতা-কর্মীকে। শত নির্যাতনের মধ্যেও তারা এ ভাষণ বাজিয়েছিল।
* কিন্তু, ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা যায় না। শত চেষ্টার পরেও তারা এই ভাষণ মুছে ফেলতে পারেনি।
* গত আড়াই হাজার বছরে যত ভাষণ হয়েছে গবেষণা করে তার মধ্যে ৪১টি ভাষণ বেছে নেওয়া হয়েছিল। তারমধ্যে স্থান পেয়েছিল এই ভাষণ। ইউনেস্কো এই ৪১টি ভাষণের মধ্যে এই ভাষণটিকে বেছে নিয়েছে। কারণ এটি ছিল অলিখিত। কিন্তু দিক নির্দেশনামূলক।
* যে ভাষণের মধ্য দিয়ে অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়নের কথা একদিকে উঠে এসেছে অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধ করার জন্য কী কী করণীয় তা বঙ্গবন্ধু বলে দিয়েছিলেন।
* আইয়ুব খান তার ডায়েরিতে লিখেছিলেন, যখন কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুকে বিচারের জন্য নিয়ে আসা হতো তখন তিনি এসে বসার সময় বলতেন ‘জয় বাংলাদেশ’। তোমরা আমার বিচার করে কী করবে, বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। যদি আমাকে হত্যা করো, আমার লাশটা বাংলাদেশে পৌঁছে দিয়ে এসো।
বেলা আড়াইটার দিকে পবিত্র কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠের মধ্যদিয়ে জনসভার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সূচনা বক্তব্য দেন। বুধবার বিকেল ৩টার দিকে জনসভায় সভাপতির আসন গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভার শেষপর্বে প্রধান অতিথির ভাষণও দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচনকেন্দ্রীক দিক-নির্দেশনা দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
৭ মার্চের জনসভা উপলক্ষে নৌকা সাদৃশ বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়। সমাবেশ মঞ্চে রাখা হয়েছে ৭ মার্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আদলে তৈরি করা প্রতিকৃতি। মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসে আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
জনসভায় দুপুরের আগ থেকে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে পবিত্র কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। বিকেল ৩টার আগেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় জনসভাস্থল।
জনসভার সূচনা বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের শপথ নিতে হবে। আজ আমাদের শপথ হোক— মৌলবাদী, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে পরাজিত করে আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনব।’ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরবর্তী নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর এই প্রথম দেশে ঐতিহাসিক এই দিনটি পালিত হচ্ছে। বৈশ্বিক এই স্বীকৃতি পাওয়ায় দিনটিকে এবার বিশেষ আয়োজনে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করছে আওয়ামী লীগ। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এবারের ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত জনসভাকে ব্যাপক গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি।
শুধু ঢাকা নয় ঢাকার বাইরের জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা এসেছেন। এই জনসভার মাধ্যমে বিশাল সমাগম ঘটিয়ে নির্বাচনী শোডাউনের নজির স্থাপন করতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ১১টা থেকে জনসভায় যোগ দিতে ঢাকা মহানগরসহ আশপাশের নেতাকর্মীরা উংসব আমেজে লাল-সবুজ, হলুদ- সাদা গেঞ্জি, ক্যাপ পরিধান করে মিছিল সহকারে জনসভাস্থলে প্রবেশ করা শুরু করে। প্রায় প্রতিটি নেতাকর্মীর হাতে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ও স্লোগান সম্বলিত নানান রঙয়ের ব্যানার, ফেস্টুন এবং প্লেকার্ড।
নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে সোহরাওয়াদী উদ্যানের তিন নেতার মাজার গেট, রমনা কালি মন্দির গেট, টিএসসি গেট, বাংলা একাডেমি গেট, চারুকলা গেট দিয়ে প্রবেশ করছে। আর ভিআইপিরা রমনার আইইবি গেট দিয়ে প্রবেশ করছে।
বাস, ছোট পিকআপ, মোটরসাইকেল করে সমাবেশস্থলে আসছেন নেতাকর্মীরা। অনেককে পায়ে হেঁটেও জনসভায় যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে।
জনসভা উপলক্ষে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য শাহবাগ হয়ে মৎস্য ভবন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এছাড়াও কাটাবনের একপাশ বন্ধ করা হয়েছে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০