বাংলা চলচ্চিত্রের রাজপুত্র সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে এই নায়কের মা নীলা চৌধুরীর দাখিল করা নারাজি আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।একইসঙ্গে ভার্চুয়ালি সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীর জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এদিকে খারিজ হওয়ার সংবাদ শুনে ক্ষুব্ধ নীলা চৌধুরী।
যুক্তরাজ্য থেকে গণমাধ্যমকে নীলা চৌধুরী জানান, আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করব। আমৃত্যু লড়ে যাব। এমনকি তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমার ছেলে মারা গেছে ২৫ বছর আগে। সেই থেকে আমরা লড়ে যাচ্ছি। আমার স্বামী বিচার চেয়ে মামলা করেছিলেন, কিন্তু তিনি বিচার দেখে যেতে পারেননি। আমার জীবদ্দশায় এই মামলা বন্ধ হবে না। আমি মরে গেলেও এই মামলা চলবে। কাউকে না কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাব। এতদিন পর্যন্ত সালমানের বিচার নিয়ে যা কিছু হয়েছে, সবকিছু প্রমাণ করে সালমান শাহ কোনোভাবেই আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
সালমানের মায়ের দাবি, পিবিআইয়ের কাছ থেকে তিনি সব কাগজপত্র পাননি। এরপর নারাজি দাখিল করেছেন। তিনি অসুস্থ। সালমানের এই ইস্যু নিয়ে তাকে অহেতুক পেরেশানি করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনের বাসা থেকে চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় প্রথমে অপমৃত্যু ও পরে হত্যা মামলা দায়ের করেন সালমান শাহ’র বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। এই অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত।
সালমান শাহ হত্যা মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে সিআইডি। প্রতিবেদনে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। তবে সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে সালমানের পিতা কমরউদ্দিন চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন।
পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
সালমানের পিতার মৃত্যুর পর মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তার মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। এরপর পিবিআই তদন্ত করেছে। সর্বশেষ গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ৬০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি জমা দেন পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম।
নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন সালমান শাহের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন।
এরপর মামলাটি তদন্ত শুরু করে র্যাব। তবে র্যাবের দ্বারা তদন্তের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ গত বছরের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করে। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ-৬-এর বিচারক ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশনটি মঞ্জুর করেন এবং র্যাবকে মামলাটি তদন্ত না করার আদেশ দেন। তখন মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া হয়।
বিএ/
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০