দেশপ্রেম, সাহসিকতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এ আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং বাংলাদেশ কোস্টগার্ড দিবস উপলক্ষে এ বাহিনীর সর্বস্তরের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পুরান আইনকে হালনাগাদ করে ‘বাংলাদেশ কোস্টগার্ড আইন, ২০১৬থ প্রণয়ন করেছি। সুনীল অর্থনীতি ও গভীর সমুদ্রে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য এ বাহিনীর রূপকল্প ২০৩০ ও ২০৪১ অনুযায়ী যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন, নিজস্ব জনবল নিয়োগের মাধ্যমে বাহিনী পুনর্গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।থ
কোস্টগার্ডের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আমাদের সরকারের ‘রূপকল্প ২০৪১থ, ‘সুনীল অর্থনীতিথ ও ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০থ এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বিশেষ অবদান রাখবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সুসংগঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ বাহিনীর সদস্যরা নিজেরাই নৌকা ক্রয় করে শত্রুর মোকাবিলা করেছেন এবং সফলতার সঙ্গে ‘অপারেশন জ্যাকপটথ পরিচালনা করেছেন। জাতির পিতার নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ ড্রাইডক এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ১৯৭২ সালে প্রথম যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ করে।
তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘দি টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস এন্ড মেরিটাইম জোন অ্যাক্টথ প্রণয়ন করা হয়। এতে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দেশের নদ-নদী ও সমুদ্রের জলরাশিতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার হয়। এই আইনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে আমাদের সরকারের উদ্যোগে সমুদ্র বিজয় সম্ভব হয়। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থেকেও সুনীল অর্থনীতি এবং বাংলাদেশের সার্বভৌম জলসীমায় নিরাপত্তা জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটি বিশেষায়িত বাহিনী গঠনের লক্ষ্যে ১৯৯৪ সালে জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বিলথ উত্থাপন করে। এ প্রস্তাবটি আইনে পরিণত হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী একটি বিকল্প বাহিনী হিসেবে ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডথ প্রতিষ্ঠিত হলেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর এ সংস্থাটি পূর্ণদ্যোমে কার্যক্রম শুরু করে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা কোস্টগার্ডকে ২টি টহল জাহাজ এবং ২টি রিলিফ বোট হস্তান্তর করি এবং ২০০১ সালে বিসিজিএস রূপসী বাংলা নামে একটি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেলকে কোস্টগার্ডে কমিশন করি। তাছাড়া, সংস্থাটির অবকাঠামো স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ প্রদান করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠনের পর এ বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে শক্তিশালীকরণথ, প্রশিক্ষণ ঘাঁটি নির্মাণ, সমুদ্রগামী জলযান সংগ্রহ অথবা নির্মাণ, অবকাঠামো নির্মাণ, বর্ধিত করাসহ বাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামোতে জনবল বৃদ্ধির দিকে মনোনিবেশ করি। স্বল্প পরিসরে যাত্রা শুরু করে এই বাহিনী বিগত তিন দশকে ৫১০২ জনের প্রশিক্ষিত বাহিনীতে পরিণত হয়েছে, যার বহরে যুক্ত হয়েছে ২৮টি বিভিন্ন ধরনের জাহাজসহ সর্বমোট ১৭৯টি জলযান।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে আমরা দেশের উপকূলীয় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোস্টগার্ডের স্টেশন ও আউটপোস্টসমূহে কোস্টাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারসহ কর্মরত সদস্যদের বাসস্থান, ব্যারাক ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করেছি। পটুয়াখালীতে নিজস্ব প্রশিক্ষণ বেইস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কোস্টগার্ডের জনবলের প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছি, যা ‘বিসিজি বেইস অগ্রযাত্রাথ নামে কমিশন করা হয়েছে। মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ড নির্মাণ করছি। অফসোর প্যাট্রোল ভেসেল, ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল, টাগ বোট, ফ্লোটিং ক্রেন, হাই স্পিড বোটসহ বিভিন্ন আকারের ৭৭টি জলযান নির্মাণ করে সংযোজন করেছি।
আমরা গত বছর কোস্টগার্ডে ২টি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল, ২টি টাগ বোট, ১টি ফ্লোটিং ক্রেন ও ১০টি হাই স্পিড বোট কমিশন করেছি। এ ছাড়া কোস্টগার্ডের অপারেশনাল কার্যক্রমকে শক্তিশালী ও বেগবান করার লক্ষ্যে দেশীয় শিপইয়ার্ডে ৪টি নতুন কোস্টাল প্যাট্রোল ভেসেল (সিপিভি) ও ৫টি রিভারাইন প্যাট্রোল ভেসেল (আরপিভি) নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছি। পাশাপাশি একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও স্মার্ট বাহিনীতে রূপান্তরের জন্য উন্নত প্রযুক্তির সমুদ্রগামী জাহাজ, হোভারক্র্যাফট, হেলিকপ্টার ও দ্রুত গতিসম্পন্ন বোট সংগ্রহের কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।
তিনি বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং বাংলাদেশ কোস্টগার্ড দিবস ২০২৪ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
বিএ...
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- k24ghonta@gmail.com, মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০