ওমর ফারুক : বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতে স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো পৃথিবী। স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যহত হয়েছে চরমভাবে। এর বাইরে ছিলনা বাংলাদেশও। এখনও প্রতিদিন প্রায় ৩৫-৪০ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আর মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে ও অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হওয়া মানুষকে ঘরে ফেরাতে যখন সেনাবাহিনীসহ সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজ করতে নিরলসভাবে। এখনও স্বাভাবিক হয়নি কোন কিছুই। ঠিক সেই সময়ে করোনা ঝুঁকির মধ্যেও একটুখানি
বিনোদন পেতে রাজশাহীর ভরা পদ্মায় ছুটে যাচ্ছেন মানুষ। শিক্ষানগরী রাজশাহীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রমত্তা পদ্মায় এখন উজানের ঢলে বয়ে আসা পানিতে ভরপুর। এখন নদীতে প্রচুর ¯্রােত বয়ে যাচ্ছে। সেই পদ্মায় এখন প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ একটুখানি বিনোদন পেতে ছুটে যাচ্ছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহীর পদ্মার পাড়গুলোতে মানুষ ভিড় করলেও বিশেষ করে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বিনোদন প্রেমীরা ভিড় জমাচ্ছেন।
নদীর ধারে নির্মল বাতাসে বসে থেকে মানুষ সন্ধ্যা ও রাত পর্যন্ত সময় কাটাচ্ছেন। এই পদ্মায় শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য একটু বিনোদন পাওয়া।
সরজমিনে ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষানগরী ও নির্মল বায়ুর শহর
রাজশাহীবাসীর বিনোদনের জন্য চিড়িয়াখানা ও শিশু পার্কসহ বেশ কয়েকটি বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে। কিন্ত বেশ কয়েক বছর ধরে নগরবাসীর কাছে চিড়িয়াখানা ছাড়াও বিনোদন কেন্দ্রের অন্যতম প্রধান স্থান হতে চলে প্রমত্তা পদ্মা নদীর ধার। আবার কেউ কেউ নৌকা ভ্রমণও করেন। পুরো নগর ঘেঁষা পদ্মার বিস্তীর্ণ এলাকার ধারগুলো সুন্দর করে বাঁধাই করা রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে নগরবাসী পদ্মার যেসব এলাকায় মানুষ যায় তারমধ্যে অন্যতম হলো, পদ্মা গার্ডেন, লালন শাহ মুক্তমঞ্চ, সীমান্ত নোঙর, সীমান্ত অবকাশ, টিঁ-বাঁধ, আই-বাঁধ। এসব স্থানে এখন বিনোদন প্রেমীরা বেশি ছুটছেন। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এসব স্থানে বিনোদনের জন্য গেলেও শুক্রবার ছুটির দিনে মানুষের ভিড় বেশি
থাকে। সেদিন ওইসব স্থানে পা ফেলায় দায় হয়ে পড়ে। বিনোদন প্রেমীদের খাওয়ার জন্য এসব এলাকায় ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে মিনি চাইনিজ, চা, বাদাম, পেয়ারা মাখানোসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে। লকডাউনের সময় এসব বিনোদন কেন্দ্রগুলো একেবারেই ফাঁকা ছিল। লকডাউন শিথিল হওয়ার পর মানুষ বিনোদন কেন্দ্রে গেলেও এখন আরো বেশি যাচ্ছেন। একঘুয়েমি কাটাতে এখন নগরবাসীর কাছে বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্রই হয়ে উঠেছে
পদ্মার ধার। শুক্রবার বিকেলে সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মার পাড়গুলোতে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সব বয়সি মানুষ বসে রয়েছেন। এদের মধ্যে কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও অনেকে মুখে মাস্ক বা সামাজিক দূরত্ব দেখা যায়নি। বিনোদন প্রেমীদের অবস্থা ও চলাফেরা দেখে মনে হয় করোনাকালীন পরিস্থিতি উধাও হয়ে গেছে।
সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় এদিন টি-বাঁধ এলাকায় প্রচুর দর্শনার্থীর ভিড় দেখা যায়। শুধু টি-বাঁধ এলাকায় নয় এখন বিনোদনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র আই-বাঁধ এলাকাতেও ছিল মানুষের ব্যাপক ভিড়। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশু, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী,
বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাসহ সব বয়সি মানুষের ভিড়। শীতল বাতাসে গা এলিয়ে মানুষ নদীর ধারেই সারি হয়ে বসে থাকেন। এ সময় অনেক বয়স্ক মানুষকেও সেখানে বসে থাকতে দেখা যায়। কেউ কেউ আবার নৌকায় চড়ে ঘুরছেন প্রমত্তা পদ্মা। তবে অনেকেই লাইফ জ্যাকেট পরে ছিলনা। সেখানে শিশুদের খেলনা বিক্রেতাদেরও দেখা যায়। রাইসা নামের এক কিশোরী বলেন, শুক্রবার হওয়ার কারণে আমি বাবা-মায়ের সাথে নদীর পাড়ে ঘুরতে এসেছি। ভাল লাগছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে থাকবো। রাফিউল নামের এক য্বুক বলেন, সময় পেলেই এখানে আসি। শীতল বাতাসে ভাল লাগে। জুবায়দা নামের এক নারী বলেন, এখন এটাই আমাদের জন্য অন্যতম প্রধান বিদোন কেন্দ্র। সুযোগ পেলেই ছেলেমেয়ে নিয়ে আসি। কিছু সময় কাটিয়ে বাড়িতে ফিরে যায়।
এমকে
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- k24ghonta@gmail.com, মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০