খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে জমে উঠতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা। তবে অন্যান্য নির্বাচনী প্রচারণায় সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকলেও এবার সেখানে পড়েছে করোনার ছায়া। সাধারণ মানুষদের আশঙ্কা, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনসমাগম ও হ্যান্ডশেক-কোলাকুলিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস।
কিন্তু সিটি নির্বাচনে মেয়র পদের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ‘আশা’ করছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাব নির্বাচনে পড়বে না। নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে, সরকার কোনো উদ্যোগ নিলে তা বাস্তবায়ন করবে কমিশন।
বুধবার (১১ মার্চ) করোনাভাইরাসের কারণে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে উন্মুক্ত অনুষ্ঠান ও জনসমাবেশ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এর আগে ৮ মার্চ বাংলাদেশে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয় বলে ঘোষণা দেয় আইইডিসিআর। এরপর রাতেই এক বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ১৭ মার্চ প্যারেড গ্রাউন্ডের মূল অনুষ্ঠান স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় মুজিববর্ষ উদযাপনে গঠিত জাতীয় কমিটি।
এছাড়া গতকাল (১০ মার্চ) সংবাদ সম্মেলন করে স্থগিত করা হয়েছে রসায়ন অলিম্পিয়াডের চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রতিযোগিতা। আগামী শুক্রবার (১৩ মার্চ) চট্টগ্রামে এ অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
এতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়েও শঙ্কা জাগে। তবে করোনার প্রভাবে নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছে সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী রেজাউল করিম।
নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনা আছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘না, কেন নির্বাচন পেছাবে? করোনা এখনো সেভাবে ছড়ায়নি। গতকালকের পেপারেও লিখেছে, যাদের করোনা হয়নি, তাদের মাস্ক পরারও দরকার নেই। এখানে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। করোনা ঠেকাতে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমাদের শুধু সচেতন হতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘করোনাভাইরাসের বিষয়ে আমি যেটি স্পষ্ট বলতে চাই, করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, যদি কোনো জ্বর, সর্দি-কাশি হয় এ বিষয়ে পার্শ্ববর্তী ডাক্তারকে আমরা বলব। তবে বাংলাদেশে যে টেমপারেচার (তাপমাত্রা), ২২-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এই টেমপারেচারের মধ্যে করোনাভাইরাস তেমন একটা এফেক্ট করতে পারে না। কারণ ভাইরাসের যে প্রভাব আছে সেটা এই টেমপারেচারে কিন্তু অত বেশি মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। কাজেই এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।’
করোনাভাইরাসের প্রভাব নির্বাচনে পড়বে কি না? জবাবে বিএনপির এ প্রার্থী বলেন, ‘করোনার কারণে আপনারা আতঙ্কিত হবেন না, দ্বিধাগ্রস্ত হবেন না। আতঙ্কিত না হয়ে আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসুন। আমাদেরকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বাংলাদেশের যে ওয়েদার এতে করোনাভাইরাস এফেক্ট করবে না বলে আমি মনে করি। তবে মানুষের মধ্যে যেহেতু আতঙ্ক আছে, তাই নির্বাচন দুই তিনদিন পেছালে সমস্যা নেই।’
তিনি বলেন, ‘তবে আমি যেটা বলব, বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। ধুলাবালি উপেক্ষা করতে হবে। জনগণের কারও যদি সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্ট হয় ডাক্তারের শরণাপন্ন হলেই হবে। সমস্ত সর্দি-কাশি-জ্বর যে করোনাভাইরাসের কারণে হবে বিষয়টি এমন নয়, এটা নিয়ে মনে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকার দরকার নেই। তবে ভোট চারদিন পেছানো উচিত, কারণ এর আগে চারদিন ছুটির দিন। এ কারণে ভোটার কম হতে পারে বলে আমরা ভয় পাচ্ছি।’
করোনার কারণে নির্বাচন পেছানো বা না পেছানো সরকারের সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেছেন, ‘করোনা থেকে বাঁচতে সবার আগে আমরা ব্যক্তিগত সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এ কারণে নির্বাচন পেছানো হবে কি না সে সিদ্ধান্ত সরকার নেবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে যদি কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় তবে আমরা তা পালন করবে।’
এদিকে করোনা ঠেকাতে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের কোলাকুলি ও হ্যান্ডশেকের মতো বিষয়গুলো সীমিত করার পরামর্শ দিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা জেনেছি, কোলাকুলি ও হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায়, তাই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী, তাদের সমর্থ ও ভোটারদের বলব, তারা যেন এই দুটি কাজ সীমিত করেন।’
খবর২৪ঘন্টা/নই
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০