নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী থেকে প্রকাশিত দৈনিক গণধ্বণি প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ইয়াকুব শিকদারের নামে সাধারণ ডায়েরি করিয়েছেন নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি। প্রতিকার না পেয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন সম্পাদক। গত ৩ জুন ডাকযোগে এ লিখিত অভিযোগ দেন ইয়াকুব শিকদার। সম্পাদক ইয়াকুব শিকদারের অভিযোগ, তার সাথে রাজপাড়া থানার কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম অসৌজন্যমূলক ও অপেশাদার আচরণ করেছেন। কিন্তু প্রতিকার না করেই ওই দিনই উল্টো সাধারণ ডায়েরি করিয়েছেন ওসি।
বিষয়টি উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলছেন ইয়াকুব শিকদার। প্রতিকার চেয়ে তিনি এই অভিযোগ করেছেন। এই ঘটনায় গত ৯ মে তিনি নগর পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি নগর পুলিশ। উল্টো এখনো বহাল তবিয়তে অভিযুক্তরা।
ভুক্তভোগী এ সাংবাদিকের ভাষ্য, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গত ৭ মে বেলা ২টার দিকে তিনি থানায় সেকেন্ড অফিসার মোস্তাক আহম্মেদের কাছে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে থানার দায়িত্বরত সেন্ট্রি শহিদুল ইসলাম তার পথরোধ করেন। ওই সময় টাকা না পেলে যেতে দেয়া হবে না বলে
জানান। কিন্তু কনস্টেবলকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। এ নিয়ে তার সাথে প্রকাশ্যে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন শহিদুল। পরে সেকেন্ড অফিসারের কাছে ফিরে গিয়ে তিনি বিষয়টি জানান। তখনই সেকেন্ড অফিসার এসে কনস্টেবলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কর্তব্যরত অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে ঘটনার দায় স্বীকার করেন কনস্টেবল শহিদুল। প্রতিকার পেতে সেখানে দাঁড়িয়েই বিষয়টি তিনি মোবাইলে আরএমপির মুখপাত্রকে জানান। কিন্তু শীর্ষ পর্যায়ে জানাজানি হয়ায় ক্ষুদ্ধ হন ওসি। তিনি প্রতিকার না করেই পাঠিয়ে দেন। এর ঘণ্টাখানিক পর তার বিরুদ্ধে থানায় জিডি নেয় পুলিশ।
এদিকে, জিডির তদন্তভার দেয়া হয়েছে থানার উপ-পরিদর্শক শরিফুল ইসলামকে। বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন,গত ৮ মে শুক্রবার রাতে তিনি নথিপত্র হাতে পেয়েছেন। খুবশিগগিরিই এর তদন্তকাজ শুরু করবেন। তার ভাষ্য, বৃহস্পতিবার দুপুরে যখন এই ঘটনা ঘটে, তিনি তখন থানায় ছিলেন। সামান্য ভুলবোঝাবুঝি থেকেই এমনটি ঘটেছে। এমন তুচ্ছ বিষয় সাধারণ ডায়েরি পর্যায়ে নেয়ার কারণ জানতে জানতে চাইলে জানা নেই দাবি করেন শরিফুল ইসলাম। একই সাথে নিয়ম মেনে তদন্তকাজ শেষ করারও কথা জানান।
এদিকে, অভিযোগ বিয়ষটি জানতে চাইলে থানার ওসি শাহাদাত হোসেন খান দাবি করেন, কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম নিজেই জিডি করেছেন। এনিয়ে তিনি কিছুই জানেননা। তবে বিধি মেনেই সেটির তদন্তভার দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠছে সেটি ভিত্তিহীন দাবি করেন ওসি।
লিখিত অভিযোগ দেয়ার সত্যতা স্বীকার করেন নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, ওই সাংবাদিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদক ইয়াকুব শিকদার বলেন, আমি ন্যায্য বিচার না পাওয়ায় আইজিপির কাছে অভিযোগ দিয়েছি। আমার বিষয়টি যেহেতু একই থানার এসি তদন্ত করেছেন এ জন্য রিপোর্ট ওসির প ক্ষে হয়েছে।
এদিকে, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা, রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি রফিক আলম জানান, সম্পাদকের নামে যা দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। আমরা এর তিব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
সম্পাদকের নামে বানোয়াট, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন হয়রানীমূলক সাধারন ডায়েরীর প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্যাবল টিভি দর্শক ফোরামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন মুন্না। তিনি বলেন, এই ঘটনা দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। অবিলম্বে দোষিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাজশাহী প্রেসক্লাব সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, অপেশাদার আচরণের প্রতিবাদ করায় সম্পাদকের নামে সাধারণ ডায়েরী দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। আমরা এর তব্র প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছি। একইসাথে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, আবেদন করে থাকলে অবশ্যই এটি পৌঁছেছে। যথা নিয়মেই এর উপর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এগুলো একটু সময়সাপেক্ষ। আবেদন করলেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই। আইনী প্রক্রিয়া মেনেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এম/আর
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০