খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: দেশের বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে পড়াশোনার খরচ বাড়লো। এমবিবিএস ও বিডিএস প্রথম বর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আসন্ন (২০১৮-২০১৯) শিক্ষাবর্ষ থেকে মোট ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা গুণতে হবে।
বিগত বছর পর্যন্ত ভর্তি ফি, ইন্টার্নশিপ ও টিউশন ফিসহ মোট ১৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা খরচ হলেও এবার অতিরিক্ত ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা বেশি লাগবে।
গত ১৫ মার্চ (বৃহস্পতিবার) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসা শিক্ষা-২ শাখার উপ-সচিব বদরুন নাহার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন আদেশ জারি হয়।
ওই আদেশ বলা হয়, ১ মার্চ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সবার সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি ফি ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা, ইন্টার্নি ফি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও টিউশন ফি ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ধার্য করা হলো। এ বিষয়ে অন্যান্য বিধি বিধান অপরিবর্তিত থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়।
শুধু পড়াশোনার খরচই নয়, ১ মার্চের ওই বৈঠকে বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ পরিদর্শন ফি বৃদ্ধি করে পুনর্র্নিধারণ করা হয়। মেডিকেল কলেজ ৭৫ হাজার ও ডেন্টাল কলেজ পরিদর্শন ফি ৫০ হাজার টাকা করা হয়।
উপ-সচিব বদরুননাহার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পুনর্র্নিধারিত ফি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা ২০১১ (সংশোধিত) এবং বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা ২০০৯ এর ৪ দশমিক ১ অনুচ্ছেদের বর্ণিত ফি’র স্থলাভিষিক্ত হবে। আগে উভয় কলেজেই পরিদর্শন ফি ২৫ হাজার টাকা কম ছিল বলে একটি সূত্র জানায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে বেসরকারি মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ১ম বর্ষে ছাত্রছাত্রী ভর্তি ফি সরকার নির্ধারণ করে।
এতে বলা হয়, ভর্তি ফি ১৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ইন্টার্নি ভাতা ১ লাখ ২০ হাজার। টিউশন ফি ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সর্বমোট ১৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ভর্তির সময় জমা করা ইন্টার্নি ভাতা ইন্টার্নশিপ চলাকালীন লভ্যাংশসহ ছাত্র-ছাত্রীদের ফেরত দিতে হবে।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ১ম বর্ষে ভর্তি ফিসহ মোট ১৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকারের প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করে হাইকোর্ট। আদালতে রিট আবেদনটি করেন ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত ইশরার বিনতে ইউনুছের বাবা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. মো. ইউনুছ আলী আকন্দ।
রিট আবেদনকারী আদালতকে জানিয়েছিলেন, ১৯৯৭ সালের ৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজকে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দিয়ে কিছু শর্তারোপ করে। ওই শর্তের ৬ ধারায় বলা হয়েছে, ভর্তির সময় কোনো ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে উন্নয়ন ফি হিসেবে কোনোক্রমেই ৫০ হাজার টাকার বেশি নেয়া যাবে না।
৭ ধারায় বলা হয়েছে, প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি মাসিক বেতন নেয়া যাবে না।
এছাড়াও বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ অনুসারে মেডিকেল ও ডেন্টাল চিকিৎসা-শিক্ষার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তির নীতিমালা ও শর্তাদি নির্ধারণ করবে কাউন্সিল। কিন্তু ভর্তির টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার খরচ কেন বেড়েছে তা জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে বেসরকারি পর্যায়ে রাজধানীসহ সারা দেশে শতাধিক মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ পরিচালিত হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শিক্ষক ও শিক্ষা উপকরণ নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। পড়াশোনার গুণগত মান ঠিক রাখতে ভর্তি ফিসহ অন্যান্য খরচ কিছুটা বেড়েছে। তবে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপালের তুলনায় খরচ এখনও অনেক কম বলে ওই কর্মকর্তারা মন্তব্য করেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- k24ghonta@gmail.com, মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০