খবর২৪ঘণ্টা,আন্তর্জাতি ডেস্ক: মার্কিন হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে বুধবার সকালে ইয়েমেনের হুদি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত হোদেইদাহ বন্দর নগরে হামলা শুরু করেছে সৌদি আরব ও তার মিত্র দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। হামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে আরব আমিরাতের চার সেনা, বাকিরা হুতি বিদ্রোহী।
২০১৫ সালে ইয়েমেনে হস্তক্ষেপের পর হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি জোটের এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। হুথিদের সব ধরনের সুবিধা বন্ধ করে দিয়ে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনার জন্যই বন্দরটিতে হামলা চালিয়েছে জোট।
সৌদি জোট ইয়েমেন নতুন করে শুরু করা এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘পুনরুদ্ধারের আশা’(রিস্টোরিং হোপ)। এই হামলার কারণে জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছে নগরের ২৫ লাখ মানুষ।
অভিযানে চার সেনা নিহতের খবর দিয়েছে সংযুক্ত আরম আমিরাতের বার্তা সংস্থা ওয়াম। তারা বলেছে, ‘দেশের জন্য দায়িত্ব পালন করতে ইয়েমেনে‘রিস্টোরিং হোপ’ অভিযানে অংশ নেবার সময় শহীদ হয়েছে আমাদের চার সেনা।’
জোট সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, বুধবার সকালে হুতি অবস্থান লক্ষ্য করে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৮টি বিমান হামলা চালিয়েছে জোট। এ সময় একটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করার দাবি করেছে হুতি বিদ্রোহীরা। তবে তাদের এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে নিহত চার সেনার নাম প্রকাশ করেছে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা। তারা হচ্ছেন: লে. খালিফা সাইফ সাইদ আল খাতরি, আলী মোহাম্মদ রাশেদ আল হাসানি, সার্জেন্ট খামিস আবদুল্লাহ খামিস আল জায়ুদি এবং হামদান সাইদ আল আবদোলি।
এর আগে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ইয়েমেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রাণ হারিয়েছিল আমিরাতের ২৫ সেনা।
বুধবার সকালে ইয়েমেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হুদাইদাহ এবং এর আশপাশের এলাকায় ইরানের সমর্থনপুষ্ট হুতি বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করেছে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত। এই বিমান হামলার সহায়তা নিয়ে লোহিত সাগরের তীরবর্তী এই বন্দর নগরীর দক্ষিণ দিক দিয়ে হুতিদের বিরুদ্ধে একই সময়ে স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইয়েমেনের সৌদি আরবের মদদপুষ্ট সেনারা।
রাজধানী সানা থেকে এই বন্দরের অবস্থান প্রায় দেড়শ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে। আর এটিই হচ্ছে দেশের একমাত্র বন্দর যা নিয়ন্ত্রণ করছে হুতিরা। হুদাইদাহ বন্দর দিয়েই দেশটির বেশিরভাগ ত্রাণ পৌঁছে। ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে অন্তত ৮০ লাখ মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে রয়েছে।
জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য
সৌদি জোট এমন এক সময়ে হুদাইদাহ বন্দরে হামলা শুরু হয়েছে যখন ইয়েমেন নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এর আগে ওই শহরে এ ধরনের সামরিক হামলার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়ে জাতিসংঘ বলেছিল, বিপুল পরিমাণ বেসামরিক লোকজন অধুষ্যিত এ শহরে হামলার অর্থ হচ্ছে এক ধরনের পাগলামি। কেননা এতে বহু লোক হতাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ ধরনের অভিযানের বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন জাতিসংঘের ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত কারেন পিয়ার্সও। তিনি জরুরি ত্রাণ সরবরাহের জন্য এই বন্দরটি মুক্ত রাখারও দাবি জানিয়েছিলেন।
হামলার আগে শহরের সব ত্রাণ সংস্থাকে মঙ্গলবার রাতের মধ্যে সেখান থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০