বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, তাদের দলের কর্মীদের রক্তের বিনিময়ে বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তাদের অনেক নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন। তারপরও তারা আদর্শ ও চেতনা থেকে এক বিন্দুও সরবেন না।
বিএনপি-জামায়াতের ঘাতকদের হাতে নিহত যুবমৈত্রীর নেতা রাসেল আহমেদ খানের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে রাজশাহীতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনার চত্বরে এ সভার আয়োজন করে রাজশাহী মহানগর যুবমৈত্রী।
আলোচনা সভার আগে শহীদ রাসেলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে আলোচনা সভায় ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ পেতে শহীদ রাসেল জীবন দিয়েছিলেন। আমাদের শত শত কর্মী কারারুদ্ধ হয়েছিল। নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছিল। এই লড়াই ছিল মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী বাংলাদেশের আপামর জনতার লড়াই। জামায়াত-বিএনপির দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ওই লড়াইকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আমরা সরকার পরিবর্তনে সম্মিলিত সংগ্রাম করলাম। কিন্তু সেই ১৪ দলের গুরুত্ব কমে গেছে। ১৪ দল নিষ্ক্রিয় হয়ে গেল। আজকে আমি এই রাসেল দিবসে বলতে চাই, রাসেলের যে আদর্শ নিয়ে সংগ্রাম করেছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টি সেই সংগ্রাম-আদর্শ থেকে এক বিন্দুও সরে দাঁড়াবে না। আমরা সেই সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাব। কোন রাজনৈতিক দল কীভাবে সেই সংগ্রামকে দেখছেন তা সে দলের নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু ওয়ার্কার্স পার্টি গভীরভাবে বিশ্বাস করে যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত না হলে সমাজে দুর্নীতি বন্ধ হবে না।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রীয় মালিকানায় কল-কারখানা গড়ে তোলা। দরিদ্র মানুষকে সুরক্ষা দেয়া। বৈষম্যহীন সমতাভিত্তিক শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠিত করা। চার মূলনীতিকে কার্যকরভাবে সর্বস্তরে সক্রিয় করা। আমি জানি না, জনগণ এর জবাব দেবে আসলেই এই কাজগুলো আমরা করতে পেরেছি কি না। যদি বাস্তবায়িত না হয়ে থাকে, তাহলে বাস্তবায়নের জন্য সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে হবে। একটা কথা আমাদের মনে রাখা দরকার- রাজনীতিবিদরা প্রতিশ্রæতি রক্ষা করতে না পারলে তাদের আবার জনগণের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এটা রাজনীতির একটা সহজাত প্রক্রিয়া। এটা থেকে কেউ মুক্তি লাভ করতে পারে না।
বাদশা বলেন, আমরা মনে করি- যে প্রতিশ্রæতি আমরা রক্ষা করতে পারিনি সেই প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নের জন্য শহীদ রাসেলের রক্তকে সমুন্নত করে আমাদের এই সংগ্রামকে সফল একটি সংগ্রামে পরিণত করতে হবে। অনেক দিন লেগে যায়। ’৫২ সাল থেকে লড়াই করে ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমরা যে সংগ্রাম ২০০১ সাল থেকে শুরু করেছিলাম আজকে ২০ বছর পার হয়ে গেছে। ২০ বছর পরও যদি আদর্শ, প্রতিশ্রæতি, লক্ষ্য অর্জন করতে পারি তাহলে সেটাই হবে আমাদের সফলতা। শহীদ রাসেল রাজনৈতিক সংগ্রামে সফলতার মধ্য দিয়ে তিনি বেঁচে থাকবেন।
শহীদ রাসেলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, যুবমৈত্রীর প্রতি আহŸান জানাই- যুবমৈত্রীকে এ দেশের তারুণ্যের শক্তির নেতৃত্ব হিসাবে দেখতে চাই। শহীদ রাসেলের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা মানেই আদর্শের প্রতি সম্মান রাখা নয়। বাস্তব সংগ্রামে আনুগত্য প্রকাশ করতে হবে। আমি আশা করি সেই আনুগত্য প্রকাশের জন্য যুবমৈত্রীর সামনের দিনগুলোতে রাজপথে থাকবে। শহীদ রাসেলের রক্ত তাহলে বৃথা যাবে না।
রাজশাহী মহানগর যুবমৈত্রীর সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির সভায় সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক বকুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, সম্পাদকমÐলির সদস্য এন্তাজুল হক বাবু, নাজমুল করিম অপু, আবদুল মতিন, মিজানুর রহমান টুকু, রাজশাহী জেলা যুবমৈত্রীর সভাপতি মনির উদ্দিন পান্না, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আক্তার অনিক, নগর যুবমৈত্রীর সহসভাপতি শামিম ইমতিয়াজ সুমন, সহসাধারণ সম্পাদক, নগরীর সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি প্রমুখ।
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০