খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: রিফাত শরীফ হত্যা মামলা বরগুনা থেকে ঢাকার আদালতে বদলি চেয়ে তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান এফআর খান।
পরে আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
গত বছরের ২৬ জুন প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড ২ জুলাই ভোরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। এর মধ্যে মামলার অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়।
১৬ জুলাই সকালে বরগুনার মাইঠা এলাকায় বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনার পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রিফাত হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ওই দিন রাত ৯টার দিকে মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
পরদিন ১৭ জুলাই বিকালে মিন্নিকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন ১৯ জুলাই বিকাল ৫টার দিকে বরগুনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
২২ জুলাই বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রথমবার মিন্নির জামিনের আবেদন করা হলে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। এরপর ৩০ জুলাই জেলা ও দায়রা জজ আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করেন।
পরবর্তীতে ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। জামিনের শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, মিন্নি তার বাবার জিম্মায় থাকবে এবং মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর ২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার আদালত 'নো অর্ডার' আদেশ দেন। পরদিন ০৩ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান মিন্নি।
এর আগে ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক, দু’ভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এরমধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন। মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক রয়েছেন।
পাশাপাশি রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ছয়জন আসামি জামিনে রয়েছেন। বাকিরা কারাগারে। ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত।
রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, হাসান, মুসা, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন। বর্তমানে মামলাটি বরগুনার আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
খবর২৪ঘন্টা/নই
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০