খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের মুসলিম নারীদের প্রতি সমর্থন জানাতে শুক্রবার সারা দেশ জুড়ে নারীরা একদিনের জন্য মাথা ঢেকে রাখবেন।
এই হিজাবি পরিধান অনুষ্ঠানের নাম দেয়া
হয়েছে‘হেডস্কার্ফ ফর হারমনি’। এর আয়োজকরা বলছেন, কী ধরনের কাপড় মাথায়
পরতে হবে বা কিভাবে তা পরতে হবে, তা নিয়ে বিশেষ কোন নিয়মকানুন থাকবে না।
শুধু এর মাধ্যমে কিউইরা নিউজিল্যান্ডের
মুসলমান নারীদের প্রতি তাদের সহমর্মিতা প্রকাশ করবেন বলে নিউজিল্যান্ড
হেরাল্ড সংবাদপত্র খবর দিয়েছে।
কিন্তু এই অনুষ্ঠানটি নিয়ে ইতোমধ্যেই
হৈচৈ শুরু হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নারীদের
প্রতি অবিচার করা হবে এবং নারীরা যে পুরুষের অনুগত সেই বার্তাও দেয়া হবে।
তবে অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলাম
বিষয়ক একজন পণ্ডিত ড. যাইন আলী বলছেন, এই অনুষ্ঠানটি নিয়ে তিনি ভীষণভাবে
গর্বিত। নিউজিল্যান্ডের মুসলমান নারীরাও অনুষ্ঠানটি নিয়ে গর্বিত হতে পারেন
বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গত শুক্রবার একজন শ্বেতাঙ্গ
শ্রেষ্ঠত্ববাদী উগ্রপন্থী নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের দুটি মসজিদে
হামলা চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যা করে।
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড বলছে, 'হেডস্কার্ফ ফর হারমনি'র ধারণাটা প্রথম আসে অকল্যান্ডের একজন ডাক্তার থায়য়া আশমানের মাথায়।
ক্রাইস্টচার্চের হামলার পর একদিন তিনি
টিভির খবর দেখতে পান যে একজন মহিলা বলছেন, ঐ ঘটনার পর তিনি হিজাব পরে বাইরে
বের হতে ভয় পাচ্ছেন। একথা শুনে তিনি মনে করলেন সারা দেশের মুসলমান
নারীদের জন্য কিছু একটা করা দরকার। এরই পথ ধরে 'হেডস্কার্ফ ফর হারমনি'
শুরু।
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড জানাচ্ছে, শুরুর
দিকে ডা. আশমান বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাথে আলাপ বলেন। পরে তিনি
ইসলামিক উইমেন কাউন্সিল অফ নিউজিল্যান্ড এবং মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন অফ
নিউজিল্যান্ডের কর্মকর্তাদের সাথেও কথা বলেন।
দুটি প্রতিষ্ঠানই ডা. আশমানের উদ্যোগের
প্রতি সমর্থন জানায়। কিউইরা কীভাবে এই মাথা ঢেকে রাখবেন তা নিয়ে ডা.
আশমান তাদের কাছ থেকে পরামর্শ চান।
তবে তিনি বলছেন, তিনি ঠিক হিজাব পরার কথা
বলছেন না। তার বদলে নিউজিল্যান্ডের নারীরা যে কোনো ভাবে কাপড় দিয়ে মাথা
ঢেকে মুসলিমদের প্রতি সমর্থন জানালেই চলবে।
তবে শুক্রবারের এই অনুষ্ঠান নিয়ে
নিউজিল্যান্ডের সোশাল মিডিয়ায় অনেকেই বিরোধিতা করছেন। অনেকে বলছেন এতে
নারী অধিকারের অবমাননা হবে।
একজন পোস্ট করেছেন: ‘হ্যাঁ, নারীদের নির্যাতন করতেই হবে। ইরানে নারীরা মাথার চাদর খুলে ফেললে তাদের পিটিয়ে জেলে ভরা হয়।’
অন্য একজনের মন্তব্য,‘নির্যাতন আর
বৈষম্যের প্রতীক মাথায় বেঁধে আপনারা এক হত্যাযজ্ঞের স্মরণ অনুষ্ঠান করছেন,
এটা ভুলে গেলে চলবে না।’
অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. যাইন আলী বলছেন, এর মধ্য দিয়ে মুসলিম নারীদের অবমাননা হবে না বলেই তিনি বিশ্বাস করেন।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে অন্য নারীদের অপমান করা হচ্ছে না। কারণ কাউকে জোর করে মাথায় কাপড় দেয়ানো হচ্ছে না।’
তিনি আরো বলেন, নিউজিল্যান্ডের নারীরা যদি মাথায় স্কার্ফ পরেন, তার মানে এই নয় যে সৌদি আরব বা ইরানে যা ঘটছে তারা তার সাথে একমত। দুটি ভিন্ন বাস্তবতাকে আলাদা করে দেখার পরিপক্বতা থাকা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০