খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা জালিয়াতিতে অভিযুক্ত রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদ একটি প্রতিষ্ঠান খুলে সরকারিভাবে অনুমতি নিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকদের মাস্ক-পিপিই সরবরাহ করছিলেন, যদিও প্রতিষ্ঠানটির কোনো অস্তিত্ব নেই। জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী চিকিৎসক হিসেবে তার ফেসভ্যালু এবং পরিচিতিকে পুঁজি করে প্রতারণা করেছেন বিভিন্ন মহলে।
এ দুজনের এমন জালিয়াতি-প্রতারণার তথ্য শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে অনানুষ্ঠানিক এক সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়।
সাহেদের মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে চুক্তি করে কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হিসেবে চিকিৎসা দিচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি র্যাবের অভিযানে ওই হাসপাতালের ভিন্ন মুখোশ উন্মোচিত হয়। দেখা যায়, করোনার নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছিল হাসপাতালটি। কেবল এই জালিয়াতিই নয়, ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখতে পান, এই হাসপাতাল মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সে চলছিল ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে। অভিযানের পর সাহেদ পালিয়ে গেলেও পরে তাকে ধরে আইনের আওতায় আনা হয়। এখন তিনি ১০ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।
অন্যদিকে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ ওঠায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে গত ১২ জুলাই গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রথমে তাকে তেজগাঁও থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকলেও সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ১৩ জুলাই তার তিন দিনের রিমান্ডে মঞ্জুর করেন আদালত। ১৭ জুলাই তাকে আরও দুদিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত।
ড. সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং এ সংক্রান্ত মামলার তদন্তের বিষয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. আব্দুল বাতেন বলেন, ডা. সাবরিনা চিকিৎসক হিসেবে তার ফেসভ্যালু এবং পরিচিতিকে পুঁজি করে প্রতারণা করেছেন। তিনি সরকারি সংস্থার কাজ করছিলেন। তদন্তে তার যেসব অনিয়মের তথ্য আমরা পাবো, সেগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়কে (স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) জানাবো, তারা অনিয়ম বিবেচনা করবে যে, সেগুলো ডিপার্টমেন্টাল অফেন্স নাকি ক্রিমিনাল অফেন্স। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ নেব।
সাবরিনার অনিয়মের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোনো কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি-না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, তদন্তে যাদের সংশ্লিষ্ট মনে হবে তাদেরই আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।
সাহেদকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার মামলার তদন্তের বিষয়ে আব্দুল বাতেন বলেন, সাহেদ অ্যালফার্ড গ্লোবাল ফ্যাক্টরি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে সরকারিভাবে অনুমতি নিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকদের মাস্ক-পিপিই সরবরাহ করতেন। অথচ প্রতিষ্ঠানটির কোনো অস্তিত্বই নেই। তিনি করোনাকালে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ফেসবুকে পেজ খুলেই পিপিই সরবরাহের সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়ে পিপিই সরবরাহ করছিলেন। এছাড়া তার ঠিকাদারি ব্যবসা ও প্রতারণার বিষয়ে আমরা আরও তথ্য পেয়েছি। উত্তরাসহ কয়েকটি থানায় এ সংক্রান্ত পাঁচটি মামলাও হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে অস্তিত্বহীন একটি প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে পিপিই সরবরাহের অনুমতি দেয়া হলো? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘কেন দিয়েছে তারাই বলতে পারবে।’
খবর২৪ঘন্টা/নই
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০