অবশেষে থানা হাজত থেকে ছাড়া পেয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছেলেকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে গিয়ে আনসার সদস্যদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে আটক হওয়া সেই বাবা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না দেওয়ায় মুচলেকা নিয়ে রাজপাড়া থানা থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তার সাথে আটক থাকা আরও দুজন রিপ্রেজেন্টকেউ ছেড়ে দেওয়া হয়। থানা হাজত থেকে ছাড়া পাওয়া সেই ব্যক্তির নাম ওমর সিদ্দিক (৩৩)। ছাড়া পাওয়ার পর দুজন হলেন, তার দুই সহকর্মী সেলিম রেজা (৩৩) ও সোহেল রানাকে (৩০)।
এ তথ্য নিশ্চিত করে নগরীর রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে তিনজনকে থানায় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না করায় ভবিষ্যতে তারা আর এমন কাজ করবে না মর্মে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য,
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুসন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন একটি ওষুধ কোম্পানির এলাকা ব্যবস্থাপক ওমর সিদ্দিক (৩৩)। সেখানে অন্য এক সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান আনসার সদস্যদের সঙ্গে। পরে তাঁকে পাঠানো হয় নগরের রাজপাড়া থানায়।
আজ রোববার সকালে হাসপাতালের বহির্বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ওষুধ কোম্পানির কর্মীরা আনসার সদস্যদের গায়ে হাত তুলেছেন। তাই তাঁদের পুলিশে দেওয়া হয়েছে। আর থানাহাজতে থাকা অবস্থায় ওমর সিদ্দিক বলেছেন, আনসার সদস্যরা আগে তাঁদের গায়ে হাত তোলেন। তিনিসহ তাঁর আরও দুই সহকর্মী সেলিম রেজা (৩৩) ও সোহেল রানাকে (৩০) আটক করা হয়েছে।
সিদ্দিকের বাড়ি চারঘাট উপজেলার বরকতপুর গ্রামে। অন্য দুজনের বাড়ি ডাকরা গ্রামে। ওমরের সন্তানের বয়স সাড়ে তিন বছর। অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁকে হাজতে নেওয়ার সময় তাঁর সন্তানকে এক স্বজনের মাধ্যমে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ওমর সিদ্দিক বলেন, তাঁর বাচ্চার কানে চর্মরোগের সমস্যা। সকালে বাচ্চাকে নিয়ে তিনি হাসপাতালের বহির্বিভাগের এক চিকিৎসককে দেখান। তাঁর সহকর্মী সোহেল রানাও হাসপাতালের ৩৪ নম্বর কাউন্টারে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন। ছেলের চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি সোহেল রানার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে আনসার সদস্যরা তাঁকে ওই দিকে যেতে বাধা দেন। এ নিয়ে তাঁরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
একজন আনসার সদস্য তাঁর গালে একটি চড় মারেন। তখন কোলে থাকা বাচ্চাটি মাটিতে পড়ে যায়। সহকর্মী সেলিম রেজা তখন বাচ্চাটিকে মাটি থেকে টেনে তোলার পাশাপাশি চড় মারার প্রতিবাদ করলে তাঁকেও হেনস্তা করেন আনসার সদস্যরা। পরে তাঁদের হাসপাতালের পরিচালকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিচালক তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার পরামর্শ দেন।
থানায় গিয়ে দেখা যায়, ছেলে কোলে নিয়ে ওমর সিদ্দিক দাঁড়িয়ে আছেন। হাতে তিনটি ওষুধের বোতল। পাশে তাঁর দুই সহকর্মী। সোহেল রানাও হাসপাতালের একটি টিকিট দেখান।
সোহেল রানা বলেন, কয়েক দিন আগে টিকিট কেটেছিলেন। কিন্তু ডাক্তার দেখানোর সুযোগ পাননি। তাই আজ রোববার তিনি ওই টিকিটে ৩৪ নম্বর কাউন্টারে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন।
এস/আর
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০