রং করা চুল আর বিভিন্ন সংলাপ বলে নেটিজেনদের হাসির খোরাক জুগিয়েছেন অপু। টিকটকে তিনি ‘অপু ভাই’ নামেই পরিচিত। তবে গ্রামের মানুষ তাকে চেনে ইয়াসিন নামে। টিকটক ভিডিও বানানোকে ঘিরে একটি মারামারির ঘটনায় ঢাকার উত্তরায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলে এলাকাবাসী তাদের ইয়াসিনকে নতুনভাবে ‘অপু’ নামে জানে। সেই মারামারির ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় করা মামলায় অপুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।
জানা গেছে, এই মামলায় পলাতক থাকায় আসামি মো. রনি ওরফে সৈয়দ রাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৮ নভেম্বর দিন ধার্য রয়েছে। অভিযোগপত্রে উল্লেখিত অন্য আসামিরা হলেন- মো. শাকিল হোসেন (২৬), মো. শাহদত হোসেন (৩০), মো. সানি (২২), মো. নাজমুল (২১) ও মো. রনি ওরফে সৈয়দ রাকিবুর রহমান (২৫)।
এদিকে আসামি মুন্না ওরফে লুৎফর রহমান (২২), জমির উদ্দিন (৪৫), মো. সুমন শেখ ওরফে পাপনের (২৭) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের পক্ষে কোনো নিরপেক্ষ প্রত্যক্ষ সাক্ষী না পাওয়ায় এবং ঘটনার সঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়। গেল ১১ অক্টোবর আদালত আবেদন গ্রহণ করে তাদের অব্যাহতি দেন।
অভিযোগ আছে- ২০২০ সালের ২ আগস্ট মামলার বাদী বাদী এস এম মাহবুবের ছেলে মেহেদী হাসান রবিন (৩০) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্বশুরবাড়ি উত্তরা থেকে ফিরছিল। উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের আলাউল এভিনিউয়ের ৫২ নম্বর বাসার সামনের পাকা রাস্তায় পৌঁছে রবিন। সেখানে রাস্তা আটকে টিকটক ভিডিও করা হচ্ছিল। রবিনসহ তিনজন প্রাইভেটকারে বসে থাকা অবস্থায় হর্ন দিলে আসামি অপু, শাকিল, শাহদত হোসেন, সানি, নাজমুল, রনি, মুন্না ও জমির উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং গাড়ি থেকে নামিয়ে তাদের মারধর করেন।
প্রসঙ্গত, ইয়াসিন আরাফাত অপুর বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নে। ছোটবেলায় বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর সোনাইমুড়ি পৌরসভার কৌশল্যারবাগ গ্রামে নানার বাড়িতে বড় হন তিনি। সেখানে কৌশল্যারবাগ তালিমুল কোরআন নুরানি কওমি মাদরাসায় দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। অভাব-অনটনের কারণে বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারেননি অপু। মোবাইল ও টিভি মেকানিকের কাজ শিখে কিছুদিন সার্ভিসিংয়ের কাজ করেন। এরপর সোনাইমুড়ি বাজার ও জেলাশহরের বিভিন্ন সেলুনে কাজ শুরু করেন তিনি। সেলুনে খুব ভালো কাজ করতেন তিনি। কিন্তু সেলুনে কাজ করার সময় টিকটক ও লাইকিতে আসক্ত হওয়ার পর তিনি কাজে উদাসীন হয়ে পড়েন। গ্রামের গণ্ডি পেরিয়ে ঢাকায় এসেও নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রাখেন অপু ভাই। চুলের কালার এবং বিভিন্ন সংলাপ তাকে আলোচনার তুঙ্গে রাখে। কিন্তু একের পর এক মারামারির ঘটনায় বিতর্কিত হয়ে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত হাজতবাসও করতে হয়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আমূল পরিবর্তন ঘটে তার। নিজেকে শুধরে নিতে শুরু করেন তিনি। ফিরে এসে ইউটিউবে নিয়মিত হন।
এসবকে ছাপিয়ে দেশের শীর্ষ নির্মাতাদের একজন আদনান আল রাজীবের ওয়েব ফিল্মে অভিনয় করেন অপু। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া বিতর্কিত কিছু বিষয় নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘ইউটিউমার’। সেই ধারাবাহিকতায় দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা অনন্য মামুনের পরিচালনায় ‘সিনিয়র ভার্সেস জুনিয়র’ নামে একটি ওয়েব সিরিজে যুক্ত হন অপু ভাই। এতে তার চরিত্রের নাম আলিয়ান। ইতোমধ্যে এই চরিত্রের জন্য অপুকে তৈরি করা হয়েছে। তার লুকে পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন এই অপুকে দেখে অবাক না হয়ে উপায় নেই। এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপুর লুক প্রশংসিত হয়েছে।
বিএ/
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল:- [email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০