নিজস্ব প্রতিবেদক :
থার্টি ফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মহানগরীতে বিভিন্ন ক্লাব বা পাড়া মহল্লার সংঘের নামে ব্যাপক চাঁদাবাজি ঘটনা ঘটেছে। আর এতে করে হয়রানির মধ্যে পড়েছেন বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
জানা গেছে, ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পার হতেই বিভিন্ন ক্লাবের নামে বা বেনামে এবং মৌখিক দল বেঁধে লোকজন এসে পিকনিক করার নামে চিঠি দিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে যায়। এরপর থেকেই শুরু হয় স্ব-শরীরে দল বেঁধে বখাটে ছেলে নিয়ে এসে চাঁদাবাজি। দাবিকৃত টাকা না দিলে মারধরের হুমকিসহ গালি-গালাজ দেয়া হয় তাদের পক্ষ থেকে। এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও বন্ধের হুমকি দেওয়া হয়। হয়রানি বা মারধরের ভয়ে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেওয়াও হচ্ছে তাদের চাঁদা। এ রকম ঘটনা ঘটেছে নগরীর লক্ষèীপুর এলাকার বেশ কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও নগরীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মকর্তা জানান, ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পার হতে না হতেই দল বেঁধে বখাটে ছেলেরা এসে ক্লাব বা সংঘের নামে চাঁদা চেয়ে চিঠি দিয়ে যাচ্ছে। চিঠি দেওয়ার দু’একদিনের মধ্যেই আবার তারা এসে টাকা দাবি করছে। টাকা দেওয়া না হলে মারধরের হুমকিতো দিচ্ছেই সেই সাথে ভাংচুর করারও হুমকি দেওয়া হয়।
ব্যবসায়ীরা আরো অভিযোগ করে জানান, প্রত্যেকদিন একাধিক ক্লাব বা সংগঠনের নামে চাঁদা চেয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। এলাকার প্রায় সব ক্লাব এসে চাঁদা চায়। সবাইকে কি সমানভাবে টাকা দেওয়া সম্ভব? আর টাকা না পেলেই মারধরের হুমকি দেওয়া হয়। বাধ্য হয়েই টাকা দিতে হয়। তাই বছরের বিশেষ কোন দিন আসলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তারা।
নাম না প্রকাশ করার এক ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে অভিযোগ করে জানানো হয় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় ১৮ দলকে তারা চাঁদা দিয়েছেন। এভাবে টাকা কেন দিচ্ছেন পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেইতো হয় এমন প্রশ্নের উত্তরে জানানো হয়,ব্যবসা করতে হলে টাকা দিতে হবে। টাকা না দিলে পরে রাস্তায় ধরে মারধর করবে আবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা করবে। তাই বাধ্য হয়ে দেওয়া। পুলিশ কয়দিন দেখে রাখবে? শুধু ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারই নয় অন্যান্য ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানেও এভাবেই প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করা হয়েছে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন বা ক্লাবের নামে। তারা টাকার জন্য অনেক সময় ব্যাপক বেপরোয়া হয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
ওই এলাকার এক ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তিনি নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, টাকা না দিয়ে উপায় কি বলেন? বাধ্য হয়েই তো চাঁদা দেই আমারা। না দিলে যেকোন সময় বিপদে পড়তে হতে পারে।
এ বিষয়ে নগর পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (সদর ও ট্রাফিক বিভাগ) ইফতেখায়ের আলম বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আরএমপির পক্ষ থেকে ব্যপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যাতে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কেউ অপ্রিতীকর ঘটনা না ঘটাতে পারে।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে