ঢাকাশনিবার , ১২ জানুয়ারি ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে মন্ত্রীদের পিএস নিয়োগ, এপিএস নিয়ে সিদ্ধান্ত রবিবার

অনলাইন ভার্সন
জানুয়ারি ১২, ২০১৯ ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: বিধি অনুযায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের (মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রী) পছন্দের ভিত্তিতেই তাদের একান্ত সচিব (পিএস) নিয়োগ দেওয়ার কথা। অতীতে হয়েছেও তাই। তবে এবার প্রথমবারের মতো তাদের পিএস নিয়োগ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে। সংশ্লিষ্টরা বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন সুশাসন নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এপিএস নিয়োগেও একই প্রক্রিয়া অবলম্বনের কথা ছিল। তবে পিএস নিয়োগ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে কিছুটা সরে এসেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উপর মহলের নির্দেশেই এপিএস নিয়োগের প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।

গণমাধ্যমকে জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব জানিয়েছেন, আগামী রবিবার নাগাদ এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।

‘দ্য মিনিস্টার্স, মিনিস্টার্স অব স্টেইট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টার্স (রেমুনারেশন অ্যন্ড প্রিভিলেজেজ) অ্যাক্ট, ১৯৭৩’ অনুযায়ী মন্ত্রীসভার সদস্যদের একান্ত সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট আইনের ১৪ (১) ধারায় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রীর পছন্দ অনুযায়ীই তাদের একান্ত সচিব নিয়োগ দেওয়ার বিধান রয়েছে। এতোদিন সেই ধারা মেনে মন্ত্রীরা পছন্দের ব্যক্তির নাম জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আধাসরকারী পত্র (ডি) পাঠাতেন। মন্ত্রণালয় কেবল সেই পছন্দ অনুযায়ী পিএস নিয়োগের আদেশ জারি করতো। তবে নানাদিক বিবেচনা করে এবার ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এরইমধ্যে নিয়োগ চূড়ান্ত করে নতুন পিএসদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করে তাদের সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভবিষ্যতে কর্মশালা আয়োজন করা হবে বলেও জানা গেছে।

প্রায়শই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পিএস-এর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ শোনা যায়। সরকারি কর্মকর্তা বা দলীয় কর্মী বাদ দিয়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পুত্র বা কন্যারও পিএস/এপিএস হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার নজির আছে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা হিসেবে যতোটা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়, মন্ত্রী তেমন কারও নাম নাও জানতে পারেন। জানা গেছে, সব দিক বিবেচনা করে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়ন করে সেখান থেকে মন্ত্রীসভার সদস্যদের পিএস পদে নিয়োগ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দাবি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তেই মন্ত্রীসভার সদস্যদের পিএস নিয়োগ দিয়েছেছে। তিনি বলেছেন, ‘আমাকে যে পিএস দেওয়া হয়েছে, তাকে আমি যোগদান করতে বলেছি এবং তিনি ইতিমধ্যে যোগদানও করেছেন। তিনি কাজ করছেন। তবে তাকে দিয়ে আমার মতো করে কাজ না হলে আমি বিষয়টি পিএমকে জানাবো।’ এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, বিষয়টি তার জানা নাই। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের কোনও হাত নাই। আগে মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া ডিও মোতাবেক নিয়োগ আদেশ দেওয়া হতো। এবার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে পিএস নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

সূত্র জানিয়েছে, পিএস-দের মতো একই প্রক্রিয়ায় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীদের এপিএস পদেও নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন ছিল। অতীতে ওই ক্যাটাগরির কর্মকর্তাদের নিয়ে নানান ধারার বিতর্কের কথা আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট পদে ক্যাডার বা নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে পিএস নিয়োগ নিয়ে নানামহল থেকে আলোচনা সমালোচনার কারণে এপিএস নিয়োগে একই প্রক্রিয়া অবলম্বনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার।

ওই যুগ্ম সচিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘রাজনৈতিক সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের পছন্দ অনুযায়ী এলাকার বা দলের পরিচিত ব্যক্তিকে এপিএস নিয়োগ না দিলে বিড়ম্বনা সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। সে কারণে এ নিয়ে স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছিল না জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আমলে নেওয়া হয়। এর পর সিদ্ধান্ত হয়, পছন্দের ব্যক্তিকে এপিএস নিয়োগ দিতে পারবেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আধা-সরকারিপত্র (ডিও) দিলে মন্ত্রণালয় তাদের নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করবে। ’

এইরমধ্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরা পছন্দের ব্যক্তিকেই সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) পদে নিয়োগ দিতে পারবেন । তবে কবে নাগাদ মন্ত্রিসভার সদস্যরা এ পদে লোক নিয়োগ দিতে পারবেন তা তিনি জানাতে পানেনি। তবে ওই যুগ্ন সচিব আশা প্রকাশ করেন, ‘পর্যালোচনা শেষে আগামী ২/১দিনের মধ্যেই সরকার এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত দেবে, তখন সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা পদক্ষেপ নেবেন। ’

খবর২৪ঘণ্টা, জেএন

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।